প্রদীপ চক্রবর্তী, চন্দননগর
স্কুলের একশো বছর উদযাপনের উৎসব। কিন্তু সেই উৎসবেরও তাল কাটল চাকরিহারা শিক্ষিকাদের উপস্থিতি। একদিকে, স্কুল ঘিরে গর্বের অতীতচারণ, অন্য দিকে, স্কলের সঙ্গেই অঙ্গাঙ্গী জড়িয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের এই ভাবে চলে যাওয়া ঘিরে শোকের আবহ-এই মিশ্র অনুভূতির সাক্ষী হলো চন্দননগরের লালবাগান গার্লস স্কুল, তার শতবর্ষ পালনের দিনেই।
বাংলা নববর্ষের আগে স্কুলে শতবর্ষ পালনের মধ্যেই ঘুরে-ফিরে উঠে এলো চাকরি বাতিলের ঘটনা। কে পড়াবেন অঙ্ক-বিজ্ঞান, তাই নিয়েই দুশ্চিন্তার মেঘ জমেছে শতাব্দীপ্রাচীন চন্দননগরের লালবাগান গার্লস স্কুলের অন্দরে। সোমবার স্কুলের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষিকাদের মন ভারাক্রান্ত, তাঁদের সহ-শিক্ষিকাদের কথা ভেবে। যাঁরা গত সাত-আট বছর ধরে তাঁদের সঙ্গে কাজ করলেন, ছাত্রীদের যথার্থ শিক্ষা দিলেন, তাঁরা আর কোনওদিন স্কুলে আসবেন না! আশ্চর্য এই যে, স্কুলের শতবর্ষের অনুষ্ঠান নিয়ে কর্মচ্যুতরাও এ দিন সমান উৎসাহী ছিলেন।
প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা মণ্ডল জানান, ২০১৬-র প্যানেল থেকে পাঁচ জন তাঁর স্কুলে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন আগেই চলে যান উৎসশ্রী নিয়ে। বাকি চার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। নবম-দশমে অঙ্ক ও বিজ্ঞান পড়াতেন তিন জন। আচমকা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি চলে যেতেই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগে সমস্যা দেখা দিয়েছে। চাকরিহারাদের একজন শিক্ষিকা একাদশ-দ্বাদশে হোম ম্যানেজমেন্ট পড়াতেন। তিনি চলে যাওয়ায় সেই ক্লাস কী করে চলবে, জানা নেই।
হতাশ গলায় তিনি এ দিন বলেন, 'আমরা ভীষণ অসুবিধের মধ্যে পড়েছি। ওঁরা কী করবেন, তার একটা স্পষ্ট নির্দেশিকা আসুক। স্কুলের স্বার্থে, পড়ুয়াদের স্বার্থে, ওঁরা যোগ্য বিচার পান, এটাই চাওয়ার।'