‘আমাদের মুসলিমরা তাড়ায়নি। বিজেপি সব লুটপাট করে তাড়িয়ে দিয়েছে…’, দাবি করছেন সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার এক ঘরছাড়া হিন্দু পরিবার। এমনই একটি ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন)। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
ওই ভিডিয়োতে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এক মহিলাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের কোনও মুসলিম লোক তাড়ায়নি। বিজেপির লোকজন তাড়িয়েছে। আমাদের সব লুটপাট করে নিয়েছে।’ ওই মহিলা সামশেরগঞ্জ থানার নিমতিতা পঞ্চায়েতের আলিনস্করপুর গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি ৫ কিমি দূরে আমুয়া কদমতলা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বাসিন্দা মৌলানা আমিরুল ইসলাম থাকেন উপদ্রুত এলাকার কাছেই। এ দিন সকালে নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আমিরুল বলেন, ‘এটা বদনাম করার জন্য করা হয়েছে। বাইরে থেকে লোক এসে এটা করেছে। স্থানীয় হিন্দুদের বাড়ি আমরা আগলে রেখেছিলাম। স্থানীয়রা এরকম কোনওদিনই করবে না। এসব মুসলিমরাও করেনি।’
তৃণমূলের দাবি, বেশি সংখ্যক মানুষ ঘরছাড়া দেখানোর জন্য বিজেপি বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে তাঁদের ঘরছাড়া করতে বাধ্য করছে। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাঁদের দাবি, বিজেপির উপর দোষ চাপানোর জন্য শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন বলতে।
বিজেপি’র জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুবলচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘ওই মহিলা তৃণমূল নেতাদের শেখানো বুলি আওড়াচ্ছে। ওই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি'র কোনও যোগ নেই। এখন বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার খেলায় নেমেছে তৃণমূল। ওই ঘটনা তার প্রমাণ।’ পাল্টা সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘সত্যি কথা শোনার অভ্যাস নেই বিজেপি নেতাদের। তাঁরা যেমন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই মিথ্যে কথা বলেন। সকলকে তাঁদের মতো মনে করছেন।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, অশান্তির পর থেকে প্রায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিলেন। রবিবার ১৯ জনকে বাড়ি ফিরিয়েছিল পুলিশ। সোমবার ৪৯ জনকে। মঙ্গলবার কয়েকশো মানুষকে ফেরানো হয়েছে। জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বুধবার আরও ৬টি পরিবারকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বাকি পরিবারগুলিকেও খুব শীঘ্রই ফিরিয়ে আনা হবে।