প্রতীক্ষার অবসান? অন্তত কানাঘুষো এমনই। শীঘ্রই শালবনিতে জিন্দাল পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস হতে চলেছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে শালবনিতে দু’টি ৮০০ মেগাওয়াটের পাওয়ার প্ল্যান্ট গড়ে তোলার ঘোষণা করেছিলেন ওই গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দাল। শালবনিতে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানা হওয়ার পরেও যে বিপুল পরিমাণ জমি পড়ে আছে, সেখানেই এই পাওয়ার প্ল্যান্ট গড়ে উঠবে বলে সূত্রের খবর। এ বার সেই পাওয়ার প্ল্যান্টেরই শিলান্যাস করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচির তারিখের বিষয়ে এখনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে JSW সিমেন্ট কারখানার এক আধিকারিক দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় ‘এই সময় অনলাইন’-কে জানিয়েছেন, ২১ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী এখানে আসতে পারেন। যদিও তা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। তবে ওই দিনই মুখ্যমন্ত্রী আসবেন ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় জিন্দালদের কারখানার শিলান্যাসের পর রাতে সার্কিট হাউসে থাকবেন। এই বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘এখনও বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি।’ একই কথা জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারও। এই বিষয়ে তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ‘প্রশাসনিকভাবে আমাদের এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। তবে দিদি আসছেন বলেই শুনেছি।’
জমিদাতাদের সংগঠনের নেতা পরিষ্কার মাহাতো বলেন, ‘সেই ২০০৮ সাল থেকেই তো আমরা আশায় বসে আছি। আমাদের শুধু প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হচ্ছে। জমি দিয়েছিলাম (২০০৮ সালে) ইস্পাত কারখানা হবে বলে। ১০ বছর পর হলো একটা সিমেন্ট কারখানা। চাকরি প্রাপকদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা মেরেকেটে ২০০-২৫০ জন! ফের একবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। শুনছি মুখ্যমন্ত্রী পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস করতে আসছেন। দেখা যাক!’
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর জিন্দালদের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ওই দিনই ফেরার পথে তাঁর কনভয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়। এরপরেই অশান্ত হয় জঙ্গলমহল। জিন্দালরা ইস্পাত কারখানার পরিকল্পনা বাতিল করে। তারপর দেড় দশক অতিক্রান্ত। ইস্পাত কারখানার বদলে সিমেন্ট কারখানা গড়ার প্রস্তুতি নেয় জিন্দালেরা। ২০১৮ সালে সেই কারখানার উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ইস্পাত কারখানা তৈরি করতে ৪ হাজারের বেশি একর জমি জিন্দালরা নিয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র ৮৪৯ একর জায়গায় সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়েছে। বাকি জমি এখনও খালি পড়ে রয়েছে।
তথ্য সহায়তা: মণিরাজ ঘোষ