দীর্ঘ ১৫ বছর ছিল ‘সমবায় ব্যাঙ্কটি’। লোকজন ভাবতেই পারেননি এ ভাবে প্রতারিত হবেন। কেউ ঘর তৈরির জন্য, কেউ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য তিল তিল করে টাকা জমিয়েছিলেন। আজ সকলে সর্বহারা। অভিযোগ, হাবরার পৃথিবা পঞ্চায়েতে আনোয়ার বেড়িয়া সমবায় ব্যাঙ্ক-এর ম্যানেজার কয়েকটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে শেষ তিন দিন ধরে পলাতক। গোটা পরিবার ‘নিরুদ্দেশ’। প্রতারিতদের দাবি, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা হোক। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে চারটি গ্রামের কয়েকশো পরিবার।
গ্রামের এক ভুক্তভোগী জানালেন, সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ফরিদা বিবি। এক সময় তাঁর বাবাও ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে কোনও আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ছিল না বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। ফরিদা বিবি ম্যানেজার হওয়ার পরই এমন প্রতারণার অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস মণ্ডল বলেন, ‘ওই ব্যাঙ্কে বাইরের কেউ কাজ করতেন না। ফরিদা বিবি-সহ ৩ ছেলে এই সমবায় ব্যাঙ্কেই কাজ করতেন। ফরিদার স্বামী রবিউল ইসলাম স্থানীয় অন্য একটি সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। যদিও ওই সমবায় ব্যাঙ্ক ঠিকঠাকই চলছে। সেখানে এমন কোনও অভিযোগ নেই। তবে রবিউলও এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত। কারণ ঘটনার পর স্বামী, স্ত্রী-সহ তিন পুত্রই পলাতক।’ ওই পরিবারের সঙ্গে কোনও প্রভাবশালীর যোগ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করছেন অনেকে।
মোট চারটি গ্রাম থেকে শতাধিক পরিবারের টাকা জমতো এই সমবায় ব্যাঙ্কে। টাকা রেখে যে অতিরিক্ত কোনও সুবিধা পেতেন গ্রাহকরা, তেমনটা নয়। তবে এলাকার ব্যাঙ্ক হওয়ায় টাকা রাখা এবং তোলায় সুবিধা ছিল। পাশাপাশি কিছু মানুষকে টাকা রাখলে বেশি সুদ পাওয়ার লোভ দেখানো হতো বলেও দাবি অনেকের।
বিষয়টি নিয়ে হাবরার এসডিপিও প্রসেনজিৎ দাস-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি এখনও বিষয়টি নিয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। হাবরা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ফরিদা বিবির বাড়ি সিজ় করেছে পুলিশ। ভুয়ো সমবায় ব্যাঙ্কের কয়েকটি অ্যাকাউন্টও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশের আরেকটি সূত্র বলছে, ফরিদা বিবি-সহ পরিবারের লোকজনের খোঁজ চলছে। শীঘ্রই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।