আমোদপুরবাসীর জন্য সুখবর। আরও একটি নতুন মেমু স্পেশাল পাচ্ছে আমোদপুর-কাটোয়া রেলপথের যাত্রীরা। অনেক লড়াইয়ের পর ২০১৮ সালে ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজ হয়েছে আমোদপুরের এই রেলপথ। তবে এলাকার লোকজনের অভিযোগ, ন্যারো থেকে ব্রড হলেও, পরিষেবায় তেমন কোনও বদল আসেনি। সারা দিনে মোটে ২টি ট্রেন চলে। দিনে চার বার যাতায়াত করে সেই ট্রেন।
অনেক দিন ধরেই সরাসরি হাওড়া কিংবা শিয়ালদহ যাওয়ার টেন-সহ ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন যাত্রীরা। সেই দাবি মেনেই শুক্রবার থেকে ওই রেলপথে নতুন একটি ট্রেন চালানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পূর্ব রেল। ট্রেনটি আমোদপুর থেকে কাটোয়া পর্যন্ত দিনে এক বার যাতায়াত করবে।
আমোদপুর-কাটোয়া তারাশঙ্কর প্যাসেঞ্জার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণ রায়, সম্পাদক আসরাফুল ইসলামরা জানান, রেলমন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নতুন ট্রেনটি ১৩টি স্টেশনের মধ্যে মাত্র ৫টি স্টেশনে থামার কথা ছিল। তবে বাকি ৮টিতেও যাতে থামে সেই দাবি ছিল তাঁদের। রেল সেই দাবি মেনে নিয়েছে। নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, এই রুটের সব স্টেশনেই থামবে ট্রেন। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যাত্রীদের কথা ভেবেই ওই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯১৭ সালে কাটোয়া-আমোদপুর রেলপথের সূচনা। তৎকালীন ৫৩ কিলোমিটার এই রেলপথের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক স্মৃতি। বীরভূমের মধ্যে পড়ে আমোদপুর। কাটোয়া পূর্ব বর্ধমান জেলায়। এই দুই জেলাকে জুড়ে দিয়েছিল এই রেলপথ। তখন অবশ্য ছিল ছোট লাইন। সেই লাইন ধরে যখন ট্রেন এগিয়ে যেত, অন্য রকম এক দৃশ্য ছিল। এই রেলপথেই রয়েছে চৌহাট্টা, লাভপুর, কীর্ণাহার, দাসকলগ্রামর মতো স্টেশন। এই ট্রেনে কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও যাতায়াত করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে ওই রেলপথকে ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে রূপান্তরের দাবিতে সরব হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিভিন্ন যাত্রী সংগঠনগুলিও সেই দাবিতে পথে নামেন। ২০১৩ সালে দাবি মেনে রেলপথকে ব্রডগেজে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় রেল। ২০১৮ সালের ২৪ মে ব্রডগেজ লাইন চালু হয়। কিন্তু পরিবেষার হাল ফেরেনি বলে নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ। এত লড়াই করে একটি ট্রেন বাড়ল, তাতেই খুশি যাত্রীরা।