• মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে তিন নিহতের পরিবারকে ১০ লক্ষ করে সাহায্য! সম্পত্তির ক্ষতিও পূরণ করবে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী
    আনন্দবাজার | ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অশান্তির জেরে যাঁদের বাড়িঘর, দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদেরও দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদ ঘিরে কয়েক দিন অশান্তি চলেছে মুর্শিদাবাদের কিছু অংশে। পুলিশ-প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটাই স্বাভাবিক!

    সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে দেশের নানা অংশের পাশাপাশি এ রাজ্যেরও বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ হয়েছে মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার বেশ কিছু এলাকায়। কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছে যে, মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটেছে। অশান্তি ছড়িয়েছে সুতি, জঙ্গিপুর, শমসেরগঞ্জ এবং ফরাক্কায়। আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। অশান্তির কারণে ঘরছাড়াও অনেকে। তাঁদের ইতিমধ্যেই ঘরে ফেরানোর কাজ শুরু করেছে পুলিশ-প্রশাসন। বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জিমদের সঙ্গে বৈঠকে গিয়ে এই অশান্তি নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘অশান্তির ঘটনায় দুই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’


    অশান্তির ঘটনায় অনেকের বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে। তাঁদের জন্যও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেবে সরকার।’’ শুধু বাড়িঘর নয়, দোকানপাটও ভাঙচুর হয়েছে। তাঁদেরও সাহায্য করা হবে বলে ঘোষণা করলেন মমতা। তিনি জানান, দোকানপাট কার কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখবেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেই ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

    গত শুক্রবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের একটি অংশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে মুর্শিদাবাদে। বিএসএফ সূত্রে খবর, ১৭ কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিচ্ছে উত্তপ্ত এলাকায়। শনিবার রাতেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। এ ছাড়াও, বিভিন্ন জেলা থেকে ‘দক্ষ’ ২৩ জন পুলিশ আধিকারিককেও পাঠানো হয় সেখানে। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখেন ডিজি। ঘুরে দেখেন হিংসাকবলিত এলাকা। দফায় দফায় পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কথা বলেন বিএসএফের সঙ্গেও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু হওয়ার পরই মঙ্গলবার তিনি মুর্শিদাবাদ ছেড়েছেন।

    মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন মমতা। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু তা অনুমতিসাপেক্ষে। তবে কোনও রকম প্ররোচনায় পা না দেওয়ার আহ্বানও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)