সংবাদদাতা, ফালাকাটা: চিকিৎসকের ভুল পরামর্শেই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করল মৃতের পরিবার। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ চলে। পরে ফালাকাটা থানার পুলিস পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঘটনার রেশ চলে বুধবারও। সন্তানহারা বাবা আমিনুল হক বলেন, চিকিৎসকের ভুল উপদেশেই মৃত্যু হয়েছে ছেলের। এখন দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলা হচ্ছে। সকালে আলিপুরদুয়ারে নিয়ে গেলে সেখান থেকে কোচবিহার রেফার করা হয় দেহ। দেরি হওয়ায় এদিন ময়নাতদন্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার তা হবে।
আমিনুল সাহেব বলেন, প্রথমে সরকারি হাসপাতালেই স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাই। পরে ওই চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে যাই। চিকিৎসকের পরামর্শে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়েছিল। ডাক্তারবাবু রিপোর্ট দেখে জানিয়েছিলেন, গর্ভস্থ সন্তানের নাক হয়নি, মুখেও ক্ষত আছে। গর্ভপাত করা না হলে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুর জন্ম হবে। শ্বাসকষ্টে শিশু মারা যেতে পারে।
এরপর ১৪ এপ্রিল স্ত্রী মুর্শিদা পারভীনকে ভর্তি করাই নার্সিংহোমে। পরেরদিন গর্ভপাত করানো হয়। বাচ্চাকে দেখতে দেওয়া হয় না। স্ত্রী জিজ্ঞাসা করলে এক কর্মী জানান, শিশুকে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পরে স্ত্রী মৃত সন্তানকে ডাস্টবিন থেকে তুলে নিয়ে এলে দেখা যায় নাক-মুখ সব ঠিকই আছে। চিকিৎসক এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পেল না। এনিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
নার্সিংহোমের ম্যানেজার দিলীপ দে বলেন, দু’জায়গা থেকে ওই প্রসূতির পরিবার ইউএসজি রিপোর্ট এনেছিল। ডাক্তারবাবু তা দেখেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বাকিটা ডাক্তারবাবুই বলতে পারবেন। চিকিৎসক সঞ্জীব দাস বলেন, কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে জানি না। ইউএসজি রিপোর্ট দেখেই পরিবারটিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
আলিপুরদুয়ারের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, অভিযোগ জমা পড়েছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরকে তা জানানোও হয়েছে। আর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি।