নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শহরের উপকণ্ঠে আস্ত নদী চুরি! আর এরই জেরে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে অস্তিত্ব সঙ্কটে ধরধরা। নদী ভরাটের বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত জানে না এমন নয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব জেনেও না জানার ভান করে হাতগুটিয়ে বসে রয়েছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর।
জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর এলাকায় ধরধরা নদী একসময় বেশ বড় ছিল। এখন অনেকটাই মজে এলেও সারাবছর জল থাকে। বর্ষায় এলাকার জলনিকাশির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে ওই নদী। কিন্তু এবার গোটা নদীটাই চুরি করতে উঠেপড়ে লেগেছে জমি মাফিয়া চক্র, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। শিবম আগরওয়াল, বিনয় রায়ের মতো স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পাহাড়পুর জমিদারপাড়া জোড়া কালভার্ট এলাকায় ৩১ডি জাতীয় সড়কের ধারে দিনেদুপুরে মাটি ফেলে ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে ওই নদী। বিষয়টি পাহাড়পুর পঞ্চায়েতকে জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। বন্ধ হয়নি নদী চুরি।
পাহাড়পুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার বলেন, কে বা কারা মাটি ফেলে ধরধরা নদী ভরাট করছে বলে লোকমুখে শুনেছি। তবে এনিয়ে তো পঞ্চায়েতের কিছু করার ক্ষমতা নেই। নদী ভরাট রুখতে আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হব। বিষয়টি ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরকেও জানানো হবে। ধরধরা নদী যদি মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলা হয়, সেক্ষেত্রে পাহাড়পুর এলাকায় জলনিকাশির বড় সমস্যা যে দেখা দেবে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয় রায় বলেন, নদী ভরাট নিয়ে আমার কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে শুনতে পাচ্ছি, পাহাড়পুর এলাকায় নাকি কে বা কারা মাটি ফেলে ধরধরা নদী ভরাট করছে। বিষয়টি শোনামাত্র ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরকে দেখতে বলেছি।
নদী ভরাট কখনওই বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ। তিনি বলেন, ধরধরা বেশ ভালো নদী। সেই নদী যদি ভরাট করার চেষ্টা হয়, প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলব। জলপাইগুড়ি সদর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রাজু তামাং বলেন, আমাদের দপ্তরে নদী ভরাট নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফোনে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে শোনামাত্র বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আমি কর্মীদের পাঠিয়েছি। তাঁরা রিপোর্ট দিলে সেইমতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে নদী। - নিজস্ব চিত্র।