• চটহাটের ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সাড়ে তিনশো কোটির লেনদেন, সইদুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট
    বর্তমান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: মাত্র ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে তিনশো কোটি টাকা! ৪০ দিন আগে ফাঁসিদেওয়ায় সাইবার প্রতারণার মামলায় ধৃত মহম্মদ সইদুলের গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিস। বুধবার তারা এ ব্যাপারে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। পুলিস জানিয়েছে, সেগুলি ‘মিউল’ বা ‘সারোগেট’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। শ্রীলঙ্কা, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি প্রভৃতি দেশ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো। তবে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় এখনও অধরা ধৃতের দাদা মহম্মদ ফাইজারুল। সে ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছে বলে পুলিসের ধারণা। 

    ফাঁসিদেওয়ার চটহাটে গ্রামবাসীদের টোপ দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে অনলাইন প্রতারণার টাকা লেনদেন করেছে সইদুল। বছর খানেক আগে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিস এ ব্যাপারে মামলা রুজু করে। ৪০ দিন আগে অভিযুক্তকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। সেই ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিস হাতে পেয়েছে। এদিন আদালতে দাখিল করা চার্জশিটে পুলিস সেই বিষয়গুলি উল্লেখ করেছে। 

    পুলিস সূত্রে খবর, চটহাটের প্রায় ৫০ জনের নামে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলে দেয় সইদুল। যারমধ্যে ১২টি তার আত্মীয়র। বাকি ৩৮টি গ্রামবাসীদের। সেগুলির কোনওটিতে এক, কোনওটিতে দু’মাস লেনদেন হয়েছে। যার পরিমাণ ৫ থেকে ১২ কোটি টাকা। অবশ্য কোনও অ্যাকাউন্টেই একসঙ্গে এত বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন হয়নি। ২ থেকে ১০ হাজার টাকা করে অসংখ্যবার অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেন হয়েছে। দার্জিলিং জেলা পুলিসের এক অফিসার বলেন, কমিশনের টোপ দিয়ে গ্রামবাসীদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি খোলে সইদুল। ব্যাঙ্কের পরিভাষায় যা মিউল বা সারোগেট অ্যাকাউন্ট হিসেবে পরিচিত। তাতে অনলাইন প্রতারণা চক্রের টাকা লেনদেন করা হয়েছে। পুলিস ও আর্থিক অপরাধ দমন এজেন্সির নজর এড়াতে ছোট ছোট টাকার অঙ্কে অসংখ্যবার অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেন হয়েছে। 

    প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ ঘোষপুকুর থেকে সইদুল ও তার এক সাগরেদকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। পুলিস সূত্রে খবর, সেই সময় ধৃত সইদুল জেরায় এক বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকা মিউল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্থানান্তরিত করার কথা কবুল করেছিল। কিন্তু পুলিসি তদন্তে ৩৫০ কোটি টাকার লেনদেনের হিসেব মিলেছে। পুলিসের এক অফিসার জানান, গত ৪০ দিনে ধৃতের গ্যাংয়ের কাছ থেকে ৫০টি অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। বাকি অ্যাকাউন্টগুলির হদিশ এখনও মেলেনি। যখন সেই অ্যাকাউন্টগুলির তথ্য মিলবে, তখন সেই বিষয়ে সাপলিমেন্টারি চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে। এদিকে, সংশ্লিষ্ট প্রতারণার ঘটনায় সইদুলের দাদা ফাইজারুলও অভিযুক্ত। তার খোঁজ এখনও পুলিস পায়নি। ফাঁসিদেওয়া থানার এক অফিসার অবশ্য বলেন, ইতিমধ্যে সইদুল সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দু’জন জামিনে আছে। শুধুমাত্র সইদুলের দাদা পালিয়ে রয়েছে। শীঘ্রই সে ধরা পড়বে বলেই আশা করছি।   
  • Link to this news (বর্তমান)