• জলপাইগুড়িতে বঞ্চনার অভিযোগে তৃণমূল পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সরব দলীয় কাউন্সিলার
    বর্তমান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বঞ্চনার অভিযোগে দল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন জলপাইগুড়ির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার মণীন্দ্রনাথ বর্মন। নিজের ওয়ার্ডে এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাঁর ‘বিতর্কিত’ বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন ওই তৃণমূল কাউন্সিলার। এমনকী দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে ট্যাগ করেছেন ভিডিওতে। এনিয়ে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পুর কর্তৃপক্ষ এবং জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের ওই কাউন্সিলারের তোলা বৈষম্যের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল। তিনি বলেন, কিছু বলার থাকলে তিনি আমাকেই বলতে পারতেন। তবে বঞ্চনা বা বৈষম্যের কোনও প্রশ্নই আসে না। উন্নয়নের টাকা সমস্ত ওয়ার্ডে সমানভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেন, কাউন্সিলার হিসেবে কোনও বক্তব্য থাকলে পুর কর্তৃপক্ষকে বলতে হবে। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনে ওই কাউন্সিলারের সঙ্গে কথা বলব। 

    তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁর ভিডিও পোস্ট নিয়ে জলপাইগুড়ি শহরে আলোড়ন ছড়িয়েছে, সেই কাউন্সিলার মণীন্দ্রনাথ বর্মনের দাবি, আমার ওয়ার্ডের সঙ্গে যদি পুরসভা বঞ্চনা করে থাকে, তা বলতে বাধা কোথায়? ওয়ার্ডের উন্নয়নে প্রস্তাব জমা দিতে দিতে ফাইল পুরু হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাধ্য হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও বার্তা দিয়েছি। আমার ওই বক্তব্য দলের রাজ্য নেতৃত্বকেও ট্যাগ করেছি। তাঁরাও বিষয়টি জানুক।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও বক্তব্যে জলপাইগুড়ির ১২নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার মণীন্দ্রনাথ বর্মনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গোটা রাজ্যের মত জলপাইগুড়িতেও উন্নয়নের জোয়ার চলছে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জলপাইগুড়ি পুরসভায় বৈষম্য বিরাজমান। ২৫টি ওয়ার্ডে যে উন্নয়নের কাজ চলছে, সমানুপাতিক হারে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তা হচ্ছে না। উন্নয়নের নিরিখে ১২ নম্বর ওয়ার্ড শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫নম্বরে রয়েছে। আমি পুর কর্তৃপক্ষকে বলব, সমানভাবে যেন উন্নয়নে নজর দেওয়া হয়।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে ওই তৃণমূল কাউন্সিলার পরে বলেন, আমার ওয়ার্ডে তিনটি বস্তি এলাকা রয়েছে। সেখানে উন্নয়নমূলক কোনও কাজ হচ্ছে না। পুকুর সংস্কারের কথা থাকলেও তা হয়নি। ১৬টি কমিউনিটি টয়লেটের মধ্যে মাত্র পাঁচটি সংস্কার হয়েছে। বাকিগুলি বেহাল। রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলাচলের পরিস্থিতি নেই। নালা সংস্কার হয় না। পানীয় জলের সঙ্কট তো রয়েইছে। পানীয় জল নিয়ে প্রতিদিন অন্তত গোটা পঞ্চাশেক অভিযোগ শুনতে হয়। সবাই তো আর ভালোভাবে কথা বলেন না। অনেকে অনেকরকম মন্তব্য করেন। 

    প্রকাশ্যে তৃণমূল কাউন্সিলার বৈষম্যের অভিযোগ তোলায় পুরসভার বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ছাড়েননি জলপাইগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার অম্লান মুন্সি। তিনি বলেন, এতদিন আমরা উন্নয়নে বৈষম্যের কথা বলে আসছিলাম। এখন শাসকদলের কাউন্সিলারই বলছেন। এটা ভালো লাগছে।
  • Link to this news (বর্তমান)