নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর: কালীগঞ্জের বিধায়ক প্রয়াত হয়েছেন বেশ কয়েকমাস হল। এরই মাঝে এপ্রিলে কানাঘুষো শুরু হয় উত্তর নদীয়ার এই বিধানসভার উপ-নির্বাচন নিয়ে। যদিও সরকারি ঘোষণা হয়নি। তবুও উপ নির্বাচনে ‘স্থগিত’ চেয়ে রাজ্য নির্বাচনকে চিঠি দিলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। নিজের কেন্দ্র ছেড়ে পড়শি কেন্দ্রের নির্বাচন নিয়ে বিজেপি সাংসদের এই ‘মাথাব্যাথা’ নিয়ে কটাক্ষ করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে একটি চিঠি দেন জগন্নাথবাবু। তাতে তিনি কালীগঞ্জের উপ নির্বাচন আপাতত ‘স্থগিত’ করে আগামী বছরই একসঙ্গে নির্বাচনের আর্জি জানিয়েছেন। যেহেতু ২০২৬ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। কিন্তু, কেন স্থগিত চাইছেন বিজেপি সাংসদ? জগন্নাথবাবু চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্যে এখন রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পরিস্থিতি টালমাটাল। এর মাঝে একটি উপ নির্বাচন কেবলমাত্র অতিরিক্ত খরচই নয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দেবে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। অর্থাৎ ঘুরিয়ে তিনি ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকেই কাঠগড়ায় তুলে নির্বাচন ঠেকাতে তৎপর।
অবশ্য তৃণমূলের একাংশের দাবি, নির্বাচনে হার হবে জেনেই আগেভাগেই নির্বাচন স্থগিত করার আর্জি জানাচ্ছেন বিজেপি সাংসদ। তাও আবার তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নয়। এর আগেও তাঁর কেন্দ্র থেকে বহু দূরে মুর্শিদাবাদ জেলার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। আদতে তিনি রাজনীতি করতেই আশেপাশের এলাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলের চিঠি লিখছেন বলে শাসকদলের দাবি।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যু হয় কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের। গত লোকসভা ভোটে তাঁর বিরুদ্ধে ‹নিষ্ক্রিয়› থাকার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু, তা সত্ত্বেও কৃষ্ণনগরের তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র ৩৪ হাজার ভোটে লিড নেন কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকা থেকে। স্বাভাবিকভাবেই, তৃণমূলের একাংশের দাবি ছিল, দলীয় বিধায়ক সক্রিয় থাকলে লিড আরও বাড়ত। ফলে এবছরই কিংবা আগামী বছর নির্বাচন হোক, তাতে কালীগঞ্জে বিজেপি ধারাশায়ী হবেই বলে মত তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটের আগে উপ নির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়লে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে তাই নির্বাচন ঠেকানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন জগন্নাথবাবু এমনই অভিযোগ তৃণমূলের।
বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের কালীগঞ্জের সংগঠন মজবুত আছে। কালীগঞ্জে তৃণমূলের গড় অক্ষুণ্ণ থাকবে। স্থানীয় রাজনীতি করা মানুষকে প্রার্থী হিসেবে আমরা দেখতে চাই। আমাদের কালীগঞ্জে বিজেপি অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে। হেরে যাবে বলেই এইসব চিঠিচাপাটি করছে। উপ নির্বাচন হলে আমরা তারজন্যও পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি।