সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ হর্ষধ্বনিতে ভরে উঠল গোটা জঙ্গিপুর মহকুমা। প্রায় আট দিন ধরে বন্ধ থাকার পর অবশেষে চালু হল ইন্টারনেট। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন আমজনতা থেকে ব্যবসায়িক মহল। খুশিতে মিষ্টি বিলি করতেও দেখা যায় মানুষকে। আসলে মানুষ এখন এতটাই ইন্টারনেট নির্ভার হয়ে উঠেছে যে, তা ছাড়া সমাজ জীবন অচল হয়ে পড়ে। আটদিন ধরে ইন্টারনেট বিহীন জীবন যাপনের পর তাই পরিষেবা ফিরে পেতেই আত্মহারা হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। তবে জঙ্গিপুর মহকুমায় ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হলেও সামশেরগঞ্জে এখনও বন্ধ পরিষেবা। যদিও সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে বলেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। সেখানেও খুব শীঘ্রই ইন্টারনেট চালু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রায় দিন আটেক আগে রঘুনাথগঞ্জের উমরপুর ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ অবরোধে উত্তাল হয়ে ওঠে। উমরপুরে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। বিক্ষোভ আন্দোলন শেষ পর্যন্ত হিংসাত্মক রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে পুলিসের সঙ্গে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পুলিসের দু’টি গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় পুলিসকে। তারপরই রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করে পুলিস। ঘটনার পরেই গুজব ছড়ানো রুখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জঙ্গিপুর মহকুমায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। জঙ্গিপুরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণে এলেও গত শুক্র ও শনিবার সূতি ও সামশেরগঞ্জে একই ইস্যুতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। তারই ফলে মহকুমাজুড়ে এতদিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধই ছিল। মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ ইন্টারনেট পরিষেবা ফের স্বাভাবিক হয়।
জঙ্গিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হতেই খুশিতে জঙ্গিপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন ক্ষুদিরাম মোড়ে মিষ্টি বিতরণ করেন স্থানীয় বাসিন্দা সইদুল মিয়া বকুল। তিনি বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য থেকে সবকিছুতেই আমরা ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছি। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি বা সময় কাটানো যাই বলি না কেন, নেট ছাড়া সব অচল। বন্ধুদের কথা দিয়েছিলাম, ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হলে মিষ্টিমুখ করাব। সেই কথা রাখতেই সকলকে মিষ্টি, সিঙারা ও চা খাইয়েছি।