• বাংলার গাছ থেকে তৈরি সিঁদুরের চাহিদা বিহার-ইউপি-দিল্লি-মুম্বইয়ে
    বর্তমান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বজবজ: পরিবেশবান্ধব জৈব সিঁদুর তৈরিতে আগ্রহ বাড়ছে বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, মুম্বইয়ে। কেমিক্যাল সিঁদুরের থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন সেখানকার গ্রাহকরা। তার বদলে মেটে সিঁদুর ব্যবহারে আগ্রহ বেড়েছে বিবাহিত মহিলাদের। ফলে চাহিদাও বাড়ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ, মুচিসা ও আমতলাজুড়ে সিঁদুর গাছ তৈরি হয়। বজবজ, মুচিসা আর আমতলায় একাধিক নার্সারি রয়েছে। 

    কেমিক্যাল সিঁদুর টকটকে লাল। কিন্ত সিঁদুর গাছের ফলের দানা থেকে তৈরি জৈব সিঁদুর লালচে মেটে রঙের। বজবজ দু’নম্বর ব্লকের সাউথ বাওয়ালির চকেতবাটি রায়পাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা নিমাইচাঁদ পাত্র একটি নার্সারির মালিক। তিনি গত দু’বছর ধরে সিঁদুর গাছের চারা তৈরি করছেন। তাঁর কথায়, দীর্ঘদিন ধরে লাল টকটকে কেমিক্যালের তৈরি সিঁদুর বাজার দখল করে রয়েছে। কিন্ত তা ব্যবহারে অনেক সময় শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। সে কারণে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, মুম্বইয়ে জৈব মেটে সিঁদুর ব্যবহারের ঝোঁক আছে। তবে এ গাছের চারা ওই রাজ্যে পাওয়া যায় না। তা চাষের আর্দশ মাটি ও আবহাওয়া হল আমাদের এই অঞ্চল। এই কারণে এ অঞ্চলে সিঁদুর চারাগাছ তৈরি হয়। মাঘ ও ফাল্গুনে গাছ হয়। দুই থেকে তিন মাস ফল থাকে। তারপর শুকিয়ে যায়। চারা পিছু ভালো দাম মেলে। 

    সিঁদুর গাছ অনেকটা লিচু গাছের মতো ঝাঁকড়া ও বড়। ফলও লিচুর মতো। প্রচুর ফল হয়। পাকলে লাল রং। ফলের ভিতর অনেক দানা। দানাগুলি জলে ভিজিয়ে রাখলে লালচে মেটে রং ধারণ করে। এরপর তা ডলে ডলে জল ছেঁকে ফেলে দিলে সিঁদুর মেলে। এই সিঁদুর শরীরে ব্যবহার করলে সমস্যা হয় না। তাই ব্যবহার বাড়ছে। আমাদের রাজ্যে মেটে সিঁদুরের ব্যবহার বাড়লে চাষ আরও বেড়ে যাবে। এখন জৈব ফলনের উপর জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। মানুষও সচেতন। এ বিষয়ে সরকার এগিয়ে এলে নার্সারিগুলি উপকৃত হবে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)