‘বউ পালিয়েছে’, ‘বাগানের গাছ কেটে নিয়েছে’, ব্যক্তিগত অভিযোগেরই ছড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পোর্টালে, নাস্তানাবুদ কর্তারা
বর্তমান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ‘বউ পালিয়েছে। খুঁজে দিন।’ ‘বাগানের গছ কেটে নিয়েছে। বিহিত করুন।’ ‘মা খুব কষ্টে আছে, বাবা দেখে না। বিষয়টি দেখুন।’ পরিবারের এরকম নানা ধরনের সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের অফিসে রোজই চিঠি জমা পড়ছে। হাজার কাজের মাঝে এরকম পারিবারিক বিবাদের বা গাছ কাটার মতো তুচ্ছ সমস্যার অভিযোগে রীতিমতো নাস্তানাবুদ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসকের অফিসের আধিকারিকরা। কিছুটা বিরক্তও বটে।
এই যেমন দিনকয়েক আগে চিঠি এল-‘স্যার, আমার বউ পালিয়ে গিয়েছে। দয়া করে খুঁজে দিন।’ বাসন্তীর এক ব্যক্তি জেলাশাসকের দপ্তরে এ অভিযোগ করেছেন। কিংবা কুলতলির সেই অভিযোগপত্রটি। তাতে এক সন্তান লিখছেন- ‘মাকে দেখে না বাবা। মা খুবই কষ্টে আছেন। বিষয়টি দেখুন।’
দপ্তরের আধিকারিকরা অভিযোগগুলির নিষ্পত্তি করতে পাঠাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্লক বা থানায়।
নাগরিক সমস্যা সংক্রান্ত অভাব-অভিযোগ জানানোর জন্য নির্দিষ্ট পোর্টাল রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের। দেওয়া রয়েছে ফোন নম্বর। প্রতিদিনই গোটা জেলা থেকে কমবেশি নানা ধরনের অভিযোগ আসে পোর্টালে। রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, নিকাশি সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে অভিযোগপত্র যেমন সেখানে জমা পড়ছে তেমনই আসছে পারিবারিক বিবাদ সংক্রান্ত তুচ্ছাতিতুচ্ছ অভিযোগও। আধিকারিকরা একপ্রকার ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এক ব্যক্তি যেমন অভিযোগপত্রে লিখেছেন, ‘তাঁর বাড়ির সামনের অংশ দখল করে কেউ দোকান বসিয়েছে।’ কারও দাবি, ‘বাগানের গাছ কেটে নিয়ে গিয়েছে।’
জানা গিয়েছে, কিছু অভিযোগের ভিত্তি থাকলেও বেশিরভাগই মিথ্যে। কিন্তু অভিযোগ এলে তার অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা করতেই হয়। তাই ব্লক বা থানা এলাকা ভিত্তিক অভিযোগের সুরাহা করতে সেগুলি সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঠিয়ে মেটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এক আধিকারিক বলেন, ‘প্রশাসনিক কাজকর্মের বাইরেও দেখছি এখন গার্হস্থ সমস্যা মেটানোর কাজে নেমে পড়তে হবে।’ এর পাশাপাশি জানা গিয়েছে, অভিযোগ জানিয়েই ক্ষান্ত হন না অনেকে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, সেটা জানতেও ফোন করেন। দপ্তরের অনেকের বক্তব্য, পারিবারিক সমস্যা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে ফেলাই কাম্য। তার জন্য কেন প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে হবে। সবমিলিয়ে এ বিষয়ে বেশ ক্ষুব্ধ আধিকারিকদের একাংশ।