• ৫ জায়গার জলাশয়-নিকাশি-নয়ানজুলি সাফ করতে বরাদ্দ সাড়ে ৪২ লক্ষ, গুঞ্জন পুরসভায়
    বর্তমান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দক্ষিণ দমদম ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকা। এখন থেকেই নালা-জলাশয়-জঙ্গল সাফ করে মশার বাড়বাড়ন্ত রুখতে চাইছে পুর কর্তৃপক্ষ। এই কাজে মোটা টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চারমাসের মধ্যে কাজ শেষের লক্ষমাত্রাও ঠিক হয়েছে। তবে পুর কর্তৃপক্ষের তৈরি বাজেট এবং সময়সীমা ঘিরে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন কাউন্সিলারদেরই একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, চারমাস পর ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এই কাজে এতদিন সময় লাগলে হবে না। একজনের আবার বক্তব্য, যে টাকা খরচ ধরা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। বাজেটের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। 

    পতঙ্গ বিশেষজ্ঞদের মত, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আবর্জনা সাফাই, কচুরিপানা ভর্তি পুকুর-ড্রেন পরিষ্কার গ্রীষ্মকালেই শেষ করা উচিত। দক্ষিণ দমদম পুরসভা শহরের গুরুত্বপূর্ণ নয়ানজুলি, জলাশয়, মিলিটারি ক্যাম্পের ভিতরে থাকা ড্রেন সাফাই করতে মোট পাঁচটি কাজ করবে। এ কাজে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ৪২ লক্ষ টাকা। কাজ শেষ করতে তিন থেকে চার মাস লাগবে বলে জানানো হয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি পুরসভার বোর্ড মিটিং হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৯ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন মিলিটারি ক্যাম্পের জঙ্গল ও ড্রেন সাফ হবে। কাউন্সিলাররা তখন বলেছিলেন, দ্রুত কাজ শেষ না করলে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়বে। পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাদের নিজস্ব শ্রমিক কম। ফলে কোনও এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রতিদিন ৩৫ শ্রমিক কাজ করবে। কাজ সম্পূর্ণ হতে লাগবে ৭০ দিন। আনুমানিক খরচ, ১০ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬০০ টাকা। এই টাকা বোর্ডে অনুমোদন হয়। 

    এর পাশাপাশি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তারকনাথ কলোনি সংলগ্ন ঝিল আবর্জনামুক্ত করতে প্রতিদিন ২০ শ্রমিক কাজ করবে। সময় লাগবে ১২০ দিন। আনুমানিক খরচ, ১০ লক্ষ ২৭ হাজার ২০০ টাকা। ওই কাজটিও অনুমোদন পায়। ইতিমধ্যে কাজ শুরুও হয়েছে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কলোনি সংলগ্ন ঝিলের আবর্জনা পরিষ্কারে ২৫ শ্রমিক ৯০ দিন কাজ করবেন। এর জন্য ৯ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়। এছাড়া দক্ষিণদাঁড়িতে নয়ানজুলির কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কার করতে প্রতিদিন ২৫ শ্রমিক কাজ করবেন। ৩০ দিন সময় লাগবে। খরচ হবে প্রায় তিন লক্ষ ২১ হাজার টাকা। তা মিটিংয়ে অনুমোদন হয়। বাঙুর থেকে লেকটাউন পর্যন্ত নয়ানজুলির সাফ করতে প্রতিদিন ৩০ জন কাজ করবেন। ৭০ দিন সময় লাগবে। এই কাজে প্রায় আট লক্ষ ৯৮ হাজার ৮০০ টাকা অনুমোদন হয়। 

    ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রীতা রায়চৌধুরী আর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুরজিৎ রায়চৌধুরী। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। এই দু’ওয়ার্ড লাগোয়া ক্যাম্পের জমি। সুরজিৎবাবু নিকাশি ও জঙ্গল সাফ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি প্রত্যেক বছর মিলিটারি ক্যাম্পের ড্রেন পরিষ্কারের চিঠি পুরসভায় জমা করি। কাজও হয়। তবে ড্রেন পরিষ্কারের জন্য আট থেকে ১০ জন শ্রমিক ১৫ দিন কাজ করলেই হয়ে যায় দেখেছি। ক্যাম্পের ভিতরের জঙ্গল কাটতে দেয় না সেনা। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’ এই প্রসঙ্গে মতামতের জন্য চেয়ারম্যান কস্তুরি চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করা হয়। মেসেজও করা হয়েছিল। তবে তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি। ফলে ডেঙ্গু দমনের কাজ নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে পুর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সে সম্পর্কে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)