মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি আক্রান্তদের, আজ শুনানি
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানালো আক্রান্তরা। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় ঘরছাড়া ৩০০ পরিবারকে ঘরে ফেরাতে আদালতে ২টি আবেদন ও মামলা দায়ের করে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আক্রান্তরা। সেই মামলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই আক্রান্তদের হয়ে এই মামলার আবেদন করেছেন বিজেপি নেত্রী ও আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এবং সংযুক্তা সামন্ত। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা।
এদিকে অশান্ত হয়ে ওঠা ধুলিয়ানে যেতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, গত কয়েক দিনের মধ্যে অন্য দলের নেতা-নেত্রীরা ধুলিয়ানে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর মক্কেলকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সেই মামলারও শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বৃহস্পতিবার।
তাছাড়া বিচারপতি ঘোষের এজলাসে মুর্শিদাবাদ নিয়ে আরও একটি মামলা দায়েরের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। একটি সংগঠন ধুলিয়ানে ঘরছাড়াদের জন্য ক্যাম্প করতে চেয়ে জেলাশাসকের অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু জেলাশাসক অনুমতি দেননি বলে অভিযোগ। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে বিষয়টি উল্লেখ করা হলে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই সংগঠনের আইনজীবীদের। তাঁর এজলাসেই মামলাটির শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অভিযোগ, এই অশান্তির ঘটনায় মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, সামসেরগঞ্জ এবং সুতি এলাকায় বেশ কিছু হিংসার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। দুষ্কৃতীদের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে বাবা ও ছেলের। বিএসএফ-এর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে আরও এক কিশোরের।
এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মুর্শিদাবাদে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কয়েকটা জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন সেই পরিষেবা চালু হলেও এখনও বেশ কয়েকটি জায়গায় তা বন্ধ রয়েছে। ঘর ছাড়া হয়েছে বহু পরিবার। ধুলিয়ান সহ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকার ৩০০ পরিবার বাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী মালদহ ও ঝাড়খণ্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা।
বুধবার বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আক্রান্তরা। মামলাকারীদের অভিযোগ, তাঁদের বাড়িতে বোমা মারা হয়েছে। তাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে তাঁরা দাবি করেন। তাঁদের আর্জি, এই চক্রান্তের নেপথ্যের জাল ছিঁড়তে এনআইএ-র হাতে তদন্তভার দেওয়া হোক। সুতি, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকার বেশ কয়েক জন বাসিন্দা বুধবার বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছেন।