নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বুধবার ইমাম–মোয়াজ্জেমদের সমাবেশ থেকে রাজ্যে অশান্তির জন্য কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলেও দাবি করেছেন তিনি। এর জন্য একযোগে কেন্দ্র, বিজেপি ও বিএসএফকে দায়ী করেছেন মমতা। পাশাপাশি তিনি এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করেন। তাঁকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম–মোয়াজ্জেমদের সম্মেলনে মমতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত হয়ে তিনি সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছেন। ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাংলায় চালু হবে না বলে ফের একবার আশ্বস্ত করেছেন তিনি। মমতা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এই আইন চালু করেছে। তাই আন্দোলনকে বাংলা থেকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেখানে তৃণমূল সাংসদরাও আন্দোলনে শামিল হবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনের সভা থেকে ইমাম মোয়াজ্জেমদের উদ্দেশে মমতা হাতজোড় করে অশান্তি নিয়ন্ত্রণের বার্তা দিয়েছেন। ধর্মীয় জায়গা থেকে শান্তির আবেদন জানাতে বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রামনবমীতেও বিজেপির অশান্তি করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ওঁদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। সঙ্কটের সময় ঠান্ডা ও সংযত হতে হবে। শান্ত থাকলে তবেই জেতা সম্ভব। অপরদিকে তিনি এ–ও বলেছেন, যেখানে গণ্ডগোল ঘটেছে তা মুর্শিদাবাদ লোকসভার মধ্যে পড়ে না। মালদহ লোকসভার মধ্যে পড়ে। সেখান কংগ্রেস জয়লাভ করেছে। ভোটের সময় জিতবে কিন্তু গণ্ডগোল হলে সামলাতে পারবে না, এটা তো আশা করা যায় না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদের অশান্তির পিছনে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে। এই তথ্য উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, রাজ্যে অশান্তির ঘটনায় বাংলাদেশের হাত থাকলে তার জন্য কে দায়ী? তিনি জানিয়েছেন, বিএসএফ পড়শি দেশ থেকে এ রাজ্যে লোক ঢুকিয়েছে। তাঁরাই সীমান্তের দায়িত্বে রয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে সীমান্ত সামলানোর অধিকার নেই। কে রাজ্যে ঢুকছে, কে বেরোচ্ছে তা রাজ্য সরকার জানতে পারে না। বাচ্চাদের টাকা দিয়ে ইট ছুঁড়িয়েছে বিএসএফ। পাাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, বিজেপি বাইরের থেকে লোক এনে এখানে গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। এজেন্সির মাধ্যমে দাঙ্গা করাচ্ছে। বাচ্চা ছেলেদের পাঁচ, ছয় হাজার টাকা করে হাতে দিয়ে ইট ছোঁড়াচ্ছে। বেকারত্ব, ওষুধপত্র ও পেট্রল ডিজেলের দাম বৃদ্ধি থেকে নজর ঘোরাতেই বাংলাকে টার্গেট করা হচ্ছে।
ভাঙড়ে অশান্তির ঘটনা নিয়েও এ দিন সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ভাঙড়ে এসব করার প্রয়োজন ছিল না। সরকারি সম্পত্তিতে আগুন লাগানো হয়েছে। কোনও কোনও ব্যক্তি নিজের পরিচয় তৈরির জন্য রাজনৈতিকভাবে এগুলো করছে।
ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ করা নিয়েও বিজেপিকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি তাড়াহুড়ো করে এই আইন তৈরি করেছে বলে অভিযোগ তাঁরা। মমতার কথায়, ‘সংবিধান সংশোধন না করে বিল পাশ করে সংশোধনী আইন করা বিজেপির চালাকি। সংবিধান সংশোধন করতে দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা লাগে। তা নেই বলেই এভাবে করেছে।’
এরপর পাঁচের পৃষ্ঠায়