পরিবারের তরতাজা ছেলের মৃত্যু হয়েছিল ৮ মাস আগে। এর পরেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিল নন্দী পরিবার। হবু ডাক্তার, বছর ২১-এর শান্তনু নন্দীকে ঘিরে পরিবারের বহু আশা আকাঙ্খা ছিল। শান্তনুর চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছিলেন না তাঁর বাবা, মা এবং ঠাকুমা।
বৃহস্পতিবার সকালে এই তিনজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে শোরগোল পড়ে গেল হুগলির গোঘাটের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের উপশালঝাড় গ্রামে। এ দিন সকালে গোয়ালে তাঁদের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান প্রতিবেশীরা। জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম অনিমা নন্দী (৭১), কাশীনাথ নন্দী (৫৫) এবং মমতা নন্দী (৪৭)।
নন্দী পরিবারের প্রতিবেশীদের দাবি, ৮ মাস আগে কাশীনাথ নন্দীর ২১ বছরের ছেলে শান্তনুও আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তিনি ডাক্তারি পড়ুয়া ছিলেন। এর পর থেকেই পরিবারের সকলে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। পাড়ার লোকজন, আত্মীয়দের সঙ্গে কথাবার্তা বলাও কমিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। কারও সঙ্গে সে ভাবে মেলামেশা করতেন না।
প্রতিবেশীদের দাবি, পুত্রশোকেই এই সিদ্ধান্ত। নন্দী পরিবারের এক প্রতিবেশী জানান, এ দিন সকালে কাউকে বাড়ি থেকে বেরোতে না দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। তাঁরা বাড়ির বাইরে থেকে অনেক ডাকাডাকিও করেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেননি। এর পর দরজা ভেঙে বাড়ির মধ্যে গিয়ে তাঁরা দেখেন, গোয়ালঘরে ৩ জনের দেহ ঝুলছে।
স্থানীয়রাই গোঘাট থানায় খবর দেন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সেখানেই চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ তাঁদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। হুগলি গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায় বলেন, ‘প্রতিবেশীদের দাবি, নন্দী পরিবারের সদস্যরা অবসাদে ভুগছিলেন। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’