এই সময়: মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের একাংশকে নিয়ে বুধবার ভবানীভবনে রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমারের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার জন্য প্রায় আড়াই ঘণ্টা ভবানীভবনের বাইরে অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। বৈঠক সেরে সুকান্তর দাবি, ‘এটা আমাদের রাজনৈতিক জয়। গত ১৫ বছরে এরকম কখনও হয়নি। আন্দোলনকারীদের চাপে ডিজিপিকে নত হতে অতীতে আমরা দেখিনি।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের আড়াই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে রাজ্য পুলিশের প্রধান এমন কিছু অবশ্য বলতে পারেননি, যা আমাদের অথবা মুর্শিদাবাদের অসহায় পরিবারগুলিকে আশ্বস্ত করতে পারে। রাজীব কুমার রাজ্য পুলিশের প্রধান হলেও ওঁর হাত–পা বাঁধা।’
সুকান্তর দাবি, খুব শিগরিরই তিনি মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের প্রতিনিধিদের নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে যাবেন। ভবানীভবনের বাইরে এ দিন বিকেলে সুকান্তরা সদলবলে ধর্নায় বসলে ডিজিপি অফিস থেকে বলা হয়, চারজনের প্রতিনিধি দল ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে। কিন্তু বিজেপির তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ঘরছাড়া যে ১১ জন বাইরে অপেক্ষা করছেন, তাঁদের সবাইকে ডিজিপির কাছে নিয়ে যেতে হবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রাজীব কুমার তাঁদের সবার সঙ্গেই দেখা করেন। তাকেই নিজেদের জয় বলে উল্লেখ করেছেন সুকান্ত।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল মুর্শিদাবাদ–সহ রাজ্যের অন্যত্র। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় আদালত। এমনকী, পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিজিপি নিজেই মুর্শিদাবাদ পৌঁছে যান। মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকার অনেকেই নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নেন নিরাপদ এলাকায়। এমনই ১১ জন ঘরছাড়াকে বুধবার রাজ্য বিজেপি দপ্তরে নিয়ে আসে বিজেপি। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে এ দিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত।
সেখানেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি ঘোষণা করেন, মুরলীধর সেন লেনের রাজ্য বিজেপি দপ্তর থেকে ঘরছাড়াদের নিয়ে তিনি ডিজিপির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। ওই সাংবাদিক বৈঠকে মুর্শিদাবাদ থেকে আসা এক মহিলার দাবি, ‘বিএসএফ ছিল বলে আমরা এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। পুলিশের উপরে আমাদের কোনও ভরসা নেই।’ সুকান্ত ছাড়াও এ দিন তাঁদের নিয়ে ডিজিপির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিন বিজেপি নেতা তাপস রায়, অর্জুন সিং এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি নেতাদের দাবি, এ দিন ঘরছাড়াদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেছেন ডিজিপি।
মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনাকে হাতিয়ার করে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যে এ দিন রাজ্যের সর্বত্র ‘হিন্দু শহিদ দিবস’ পালন করে তারা। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভা চত্বরেও দিনটা পালন করা হয়। সুকান্তও এ দিন দিনভর কলকাতা এবং লাগোয়া কয়েকটি জেলায় গিয়ে ‘হিন্দু শহিদ দিবস’ পালন করেন।