• এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হলো অধ্যাপককে
    এই সময় | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, দুর্গাপুর: বিস্ফোরণে দগ্ধ এনআইটি–র (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি) অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ বসাককে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলো দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতে অন্ডালের কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শরীরের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ অংশ বিস্ফোরণে ঝলসে গিয়েছে। কলেজের অধ্যাপক তথা জনসংযোগ আধিকারিক শ্রীকৃষ্ণা রাই বলেন, ‘দিল্লিতে সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অধ্যাপক বসাককে। আমরা সেখানে যোগাযোগ রাখছি। ডাক্তারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তবে বিস্ফোরণের পরে ওঁর যে অবস্থা ছিল, তার থেকে একটু উন্নত হয়েছে। আমরা তাঁর সুস্থতা কামনা করছি।’

    দুর্ঘটনার পরেই এনআইটি–র ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবে অধ্যাপক বসাককে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরের চেষ্টা করেন। অধ্যাপকের ছেলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরিবারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য এনআইটি কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবেন তাতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। এর পর ওই অধ্যাপককে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করে এনআইটি। দুর্গাপুরে ভর্তি থাকা বেসরকারি হাসপাতালের যাবতীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট সংগ্রহ করে পাঠানো হয় দিল্লির হাসপাতালে। ইতিমধ্যে ব্যবস্থা করা হয় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের। যোগাযোগ করা হয় কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সমস্তরকম ছাড়পত্র পাওয়ার পরে সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকা অধ্যাপককে দুর্গাপুরের হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় বিমানবন্দরে। মধ্যরাতে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে।

    গত মঙ্গলবার সকালে এনআইটি–র মেকানিক্যাল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে থার্মিক ওয়েল্ডিং সংক্রান্ত একটি প্রজেক্টে হাতে–কলমে কাজ শেখাচ্ছিলেন আধ্যাপক বসাক। ওয়েল্ড ট্যাঙ্কে মজুত রাসায়নিকে আগুন দিলে কী ভাবে বিক্রিয়া হয় তা দেখাচ্ছিলেন তিনি। একটি স্ট্যান্ডের উপর ওয়েল্ড ট্যাঙ্কটি রাখা ছিল। কিছুটা ফানেল আকৃতির ট্যাঙ্ক। উপরের অংশ খোলা। একটি কাগজের টুকরোতে আগুন ধরিয়ে ট্যাঙ্কে ফেলা মাত্র প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে মারাত্মক ভাবে দগ্ধ হন অধ্যাপক বসাক। পাশে দাঁড়িয়ে পুরো প্রক্রিয়াটির ভিডিয়োগ্রাফি করছিলেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আকাশ মাঝি। বিস্ফোরণে তাঁরও দু’টি হাত ঝলসে যায়। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়েছিলেন দুই ছাত্রী। মুহূর্তে সরে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে পেরেছেন তাঁরা। এনআইটির ডিরেক্টর জানিয়েছেন, খুবই অভিজ্ঞ ও দক্ষ ওই অধ্যাপক অতাতে এমন পরীক্ষা বহুবার করেছেন। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)