• পাকা বাড়ি তৈরিতে গ্রামীণ এলাকাতেও অনলাইনে অনুমোদন
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • গ্রামীণ এলাকাতেও বাড়ি নির্মাণের প্ল্যান অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন

    অনিয়ম বন্ধ করার লক্ষ্যে এবার পাকা বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে গ্রামীণ এলাকাতেও বাধ্যতামূলক হচ্ছে অনলাইনে আবেদন। এই পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন পঞ্চায়েত দপ্তরের কাজে স্বচ্ছতা বাড়বে, ঠিক তেমনই রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী প্রশাসন। আর সবচেয়ে বড় কথা, কোনও নেতা বা প্রভাবশালীর উপর নির্ভর না করে ঘরে বসেই আবেদন জানাতে পারবেন গ্রাম বাংলার মানুষেরা। এর আগে শহরাঞ্চলে বাড়ি তৈরির জন্য অনলাইন প্ল্যান অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল মেলায় এবার গ্রামীণ এলাকাতেও অনলাইনে অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসের শেষ থেকে গোটা প্রক্রিয়া চালু হতে চলেছে।

    গ্রামীণ এলাকায় আগে বাড়ি নির্মাণের প্ল্যান অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ থাকলেও তা বাধ্যতামূলক ছিল না। অনেকেই স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্মীদের সঙ্গে বোঝাপড়া করে অনুমতি নিয়ে নিতেন। এর ফলে ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হত সরকার। নতুন ব্যবস্থায় বাড়ি তৈরির আগে নির্দিষ্ট অনলাইন পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে। সেইখানে সমস্ত নথি আপলোড করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে – বাড়ির নকশা, জমির বিবরণ, খতিয়ান ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি। আবেদন করার পর সমস্ত নথি খতিয়ে দেখা হবে। পরবর্তী ধাপে সংশ্লিষ্ট জমি পরিদর্শন করতে যাবেন পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্মীরা। সরেজমিনে সমস্ত কিছু দেখে তবেই অনুমোদন দেবেন পঞ্চায়েতের কর্মীরা।

    বিল্ডিং প্ল্যান অনুমতির ফি-ও অনলাইনে প্রদান করা যাবে। এর ফলে কোনও ভাবেই সরকার নির্ধারিত ফি-র বেশি টাকা দিতে হবে না বাসিন্দাদের। পুরো প্রক্রিয়ায় মানুষ সরাসরি জড়িত থাকবে না বললেই চলে। এর ফলে গোটা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় থাকবে। পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ মেনে ধীরে ধীরে পঞ্চায়েত পর্যায়ের অধিকাংশ কার্যকলাপ অনলাইনে নিয়ে আসা হচ্ছে। এজন্য কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন কাজের জন্য আলাদা পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। অনেকেই অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদনে সড়গড় নন। সেক্ষেত্রে সরকারের তরফে বাসিন্দাদের বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

    রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রাজ্যবাসী বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য অনলাইনে আবেদন জানাতে পারেন। বর্তমানে দোতলা পর্যন্ত বাড়ির অনুমতি পঞ্চায়েত স্তরেই মিলবে, তবে বহুতল নির্মাণের জন্য অনুমতি নিতে হবে জেলা পরিষদ বা সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সংস্থার কাছ থেকে। নতুন নিয়মে সব ক্ষেত্রেই অনলাইনে আবেদন করতে হবে। পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি নির্মাণের প্ল্যান অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া চালু হলেও কাজের স্বচ্ছতা বাড়বে। একই রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।

    পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রে খবর, নতুন প্রক্রিয়ায় গ্রামে বাড়ি বানাতে হলে অনলাইনে আবেদন জানাতে হবে। নকশা ও অন্যান্য কাগজপত্র আপলোড করতে হবে আবেদনপত্রের সঙ্গে। অনলাইনেই জমা নেওয়া হবে নির্ধারিত ফি। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে অনলাইনের বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমতি দেওয়া হবে। গোটা বিষয়টি যাচাই করার জন্য পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট জমি খতিয়ে দেখবেন। নির্মাণ কাজ শুরুর কথাও নির্দিষ্ট পোর্টালেই জানাতে পারবেন মালিক বা প্রোমোটার। বাড়ির কমপ্লিশন সার্টিফিকেট ও অকুপেন্সি সার্টিফিকেট অনলাইনেই ডাউনলোড করা যাবে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)