‘৩১ ডিসেম্বর মৃত্যুদিন ঠিক করে দেওয়া হল,’ সুপ্রিম রায়ে হতাশার সুর ‘যোগ্য’দের গলায়
প্রতিদিন | ১৭ এপ্রিল ২০২৫
রমেন দাস: ক্ষোভ, হাহাকার, কষ্ট! চাকরি হারানোর পর ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গলায় ছিল হতাশা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট সাময়িক স্বস্তি দিলেও সেই হতাশা কাটল না! শীর্ষ আদালত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু সেই দিনটিকে ‘মৃত্যু দিন’ হিসাবে ধার্য করে দেওয়া হল বলে মনে করছেন ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, যতবছর পর্যন্ত সার্ভিস টাইম রয়েছে অর্থাৎ ৬০ বছর পর্যন্তই চাকরি করতে দিতে হবে।
চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশ কলকাতায় ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঢেউ ওঠে অবস্থান এলাকায়। একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন সকলে। অল্পক্ষণেই স্পষ্ট হয়ে যায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকবেন তাঁরা। কিন্তু তারপর? সেই উত্তর আপাতত কালের গহ্বরে।
কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে দাঁড়িয়ে চাকরিহারা এক শিক্ষক অরবিন্দ মজুমদার বলেন, “খুব একটা অস্বস্তি কমার খুব একটা কিছু দেখতে পারছি না। কারণ ৩১ ডিসেম্বর আমার মৃত্যুদিন বলে দেওয়া হল। ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হল। সেটা কী করে সাময়িক স্বস্তি হতে পারে। এটা অন্যায়। আমরা সঠিকভাবে চাকরি পেয়েছি। আমাকে আদালত যোগ্য বলছে। তাহলে কেন ৩১ তারিখ পর্যন্ত চাকরি করব? যতদিন চাকরি থাকার ততদিন চাকরি করব।” পাশাপাশি তাঁরা অবস্থান চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এই রায়ে যোগ্য শিক্ষকদের কথা বলা হলেও। অশিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি আদালত। সেই কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে এক শিক্ষক জানিয়েছেন, “সাময়িক স্বস্তি থাকলেও পুরোপুরি আশ্বস্ত তো হতে পারছি না। আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। অযোগ্যদের বাদ দিয়ে যোগ্য শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের নিজেদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।” চাকরিহারাদের কেউ কেউ বলছেন আদালতের রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। অনেকে কাজে যোগ না দেওয়ার কথাও বলছেন। তবে সর্বসম্মত কোনও সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি।
সুপ্রিম রায়ে এসএসসির ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলে ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি গিয়েছে। চাকরিহারা ‘যোগ্য’দের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে শীর্ষ আদালতে যায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানিতে আদালত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়োগের সময় দিয়েছেন বিচারপতি। ততদিন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা চাকরি করতে পারবেন, সঙ্গে মিলবে বেতনও।