অবশেষে চাকরিহারা শিক্ষকদের জন্য সাময়িক সমাধান সূত্র মিলল সুপ্রিম কোর্টে। আপাতত ‘টেন্টেড’ (অযোগ্য) তালিকায় নাম না-থাকা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে পড়াতে পারবেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। পড়ুয়াদের কথা ভেবেই সুপ্রিম কোর্টের এই রায়। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের রায়ের পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘আপাতত স্বস্তি পাওয়া গিয়েছে। আমাদের জন্য এই রায় আশাব্যঞ্জক।’ একইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস, সমস্ত আইনি সহায়তা নিয়ে বঞ্চিত ও চাকরিহারাদের পাশে আছে সরকার। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না পর্যন্ত বঞ্চিত ও যোগ্যদের পূর্ণ মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পারছি, ততক্ষণ স্বস্তি নেই। বঞ্চিতদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আছেন, সরকার আছে। আমরা এটা শেষ পর্যন্ত দেখব।’
রায় প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী আরও একবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তো আগেই বলেছিলাম আপনারা কাজে ফিরুন। সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত আইনি সহায়তা নিয়ে আপনাদের পাশে আছেন, থাকবেন।’
আগামিকাল থেকে কারা স্কুলে যাবেন সেই নিয়ে কোনও তালিকা প্রকাশ করা হবে কি না জানতে চাওয়া হলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘এদিনের রায়ে কাল থেকে কারা স্কুলে যাবেন সেই নিয়ে শিক্ষকদের কোনও তালিকা প্রকাশের কথা মহামান্য আদালত বলেননি। তাই এরকম কোনও তালিকা প্রকাশের প্রশ্ন নেই।’ তবে এ প্রসঙ্গেই শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করেন পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এসএসসি ২১ এপ্রিল পুরো প্যানেল খতিয়ে দেখে যোগ্য ও অযোগ্যদের একটি তালিকা প্রকাশ করবে।
৩ এপ্রিলের এসএসসি মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিশেষ আবেদন নিয়ে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলার শুনানিতেই যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এদিন শর্তসাপেক্ষে কর্মক্ষেত্রে ফেরার অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। অন্যদিকে, শিক্ষকরা এই রায়ে স্বস্তি পেলেও কী হবে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, ‘শুধু চাকরিহারা শিক্ষক নয়, শিক্ষাকর্মীদেরও পাশে আছে সরকার। যথা সময়ে আইনি পরামর্শ মনে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে। আইনি সহযোগিতা নিয়ে এর পরের ধাপ কী হবে তা জানানো হবে। আজ যেমন শিক্ষকদের জন্য স্বস্তির খবর এসেছে, তাদের জন্যেও অবশ্যই কিছু না কিছু হবে।’
অযোগ্য শিক্ষকদের বেতন ফেরানোর প্রশ্ন থেকে শুরু শিক্ষকদের পুরোনো সরকারি চাকরিতে ফেরা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিস্তারিত রায় না পড়ে এবিষয়ে কথা বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে রাজ্যের চাকরিহারাদের পাশে থেকে শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।