অবশেষে ‘কৌমার্য’ ভঙ্গ করে ‘দার’ পরিগ্রহ করতে চলেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার ৬১ বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন তিনি। এদিন সল্টলেকের বাড়িতে দিলীপ-রিঙ্কুর চারহাত এক হবে। অত্যন্ত ঘরোয়া এক অনুষ্ঠানে সেটি সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। কারণ তিনি আড়ম্বর পছন্দ করেন না। সেজন্য আমন্ত্রিত সদস্যের সংখ্যাও খুবই নগণ্য। মূলত দিলীপ এবং রিঙ্কুর নিকট আত্মীয়রাই এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনও অনুষ্ঠানে থাকবেন বলে সূত্রের খবর।
এদিকে দিলীপ যাতে বিয়ে না করেন, সে ব্যাপারে সঙ্ঘ পরিবারের একাংশ সক্রিয় হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এমনকি শোনা যাচ্ছে, সঙ্ঘের দু’জন কর্যকর্তা দিলীপের বাড়িতেও চলে গিয়েছেন! তবে দিলীপ বিবাহের সিদ্ধান্তে স্থির রয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এখন আর ফেরা সম্ভব নয়। যদিও বিজেপির একাংশ তাঁর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, যাঁর সঙ্গে দিলীপের চার হাত এক হতে চলেছে, তিনি একজন বিবাহ বিচ্ছিন্না। ওই পাত্রীর নাম রিঙ্কু মজুমদার। তাঁর একটি প্রাপ্ত বয়স্ক পুত্র সন্তানও রয়েছে। রিঙ্কুর ছেলে সেক্টর ফাইভে একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত।
ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক দিলীপ ঘোষের সঙ্গে রিঙ্কুর রাজনৈতিক সূত্রেই আলাপ। কারণ রিঙ্কু নিজেও একজন বিজেপি কর্মী। গত লোকসভা ভোটে হেরে যাওয়ার পর যখন মনখারাপ ছিল দিলীপ ঘোষের, তখন তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান রিঙ্কু। তিনি দিলীপকে ঘর বাঁধার প্রস্তাব দেন। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন পাত্রী নিজেই। বিবাহ বিচ্ছিন্না রিঙ্কু দিলীপকে জানিয়েছিলেন, যেহেতু এখন তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। তাই তিনি দিলীপের সঙ্গেই থাকতে চান। গত ৩ এপ্রিল ইডেনে ক্রিকেট ম্যাচ দেখার সময় দিলীপ ও রিঙ্কু তাঁদের বিয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনাচক্রে ওইদিন ইডেনের বক্সে রিঙ্কুর পুত্রও কেকেআর-সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ দেখতে হাজির হয়েছিলেন।
যদিও দিলীপ প্রথমে রাজি না-হলেও পরে তাঁর মায়ের জোরাজোরিতে রাজি হয়ে যান। দিলীপ ঘোষের মা ছেলে ‘নাড়ু’র সঙ্গে সল্টলেকেই থাকেন। রাজনীতির কারণে দিলীপ সব সময় বাইরে থাকেন। সুতরাং দিলীপের মা অধিকাংশ সময় একাই থাকেন। তাঁর বয়স হয়েছে। ফলে সর্বক্ষণ সঙ্গী পেতে দিলীপের বিয়ের পক্ষেই মত দিয়েছেন। তাঁর মা চাইছিলেন, পুত্র দিলীপ বিবাহ করে সংসারী হোন। তা হলে তিনি পুত্রবধূর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।
প্রসঙ্গত কয়েকমাস আগেও সংসারধর্ম পালনের কথা ভাবেননি। কিন্তু ধীরে ধীরে দিলীপ ঘোষ বুঝতে পারেন, জীবনের এই বৃত্তটিও পূর্ণ করতে হবে। কার্যত ‘পাকা কথা’ নাকি হয় গত ৩ এপ্রিল ইডেনে আইপিএলে কেকেআরের ম্যাচ দেখতে দেখতে। ওই দিন ক্লাব হাউসের ১১ নম্বর বক্সে বসে খেলা দেখেন দিলীপ, তাঁর হবু স্ত্রী এবং হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।
বৃহস্পতিবারেই দিলীপের আসন্ন বিবাহের বিষয়টি জানাজানি হতে শুরু করেছে। সরাসরি তাঁকে প্রশ্ন করেছিল একটি সংবাদমাধ্যম। দিলীপ তাঁর অননুকরণীয় ভঙ্গিতে বলেন, ‘‘কেন, আমি কি বিয়ে করতে পারি না নাকি? বিয়ে করা কি অপরাধ নাকি?’’ ওই সংবাদমাধ্যমকে দিলীপ ‘হ্যাঁ-না’ কিছুই বলেননি ঠিকই। তবে ‘হ্যাঁ’ যেমন বলেননি, তেমনই ‘না’-ও বলেননি।