নারায়ণ সিংহ রায়: অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে বাবার একাউন্ট থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা হেরে গিয়ে আত্মঘাতী কিশোর।
অনলাইন গেম খেলাই কাল হল। আত্মঘাতী চড়ক পুজোর ব্রত নেওয়া কিশোর সন্ন্যাসী অভীক পাল। অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা হেরে গিয়ে অবশেষে আত্মঘাতী হল কিশোর।
শিলিগুড়ির ৩৭নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা মৃত কিশোরের বাবা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন, তার মা গৃহবধু। বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে বেশি ভাব ছিল না মৃত কিশোরের। পড়াশুনোর পাশাপাশি কাজের বাইরে বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকতেই পছন্দ করতেন ওই কিশোর। তবে তাঁর সময় কাটানোর বিকল্প পথ ছিল অনলাইন গেম।
তাই মোবাইলের গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা বিনিয়োগ করে হেরে যায় ওই কিশোর। গেম খেলে টাকা খুইয়ে আত্মঘাতী হল বছর ১৭-র অভীক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত অভীক একাদশ শ্রেণীতে পড়তেন । পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন সাতেক আগে ছেলে চড়ক পুজোর ব্রত করেছিল। সাতদিন নিরামিষ খাবার পর বুধবার মৎস্যমুখী করার কথা ছিল তার। সেই হিসেবে সকালবেলায় বিছানায় শুয়েই মাকে জানিয়েছিল মাছ আনার জন্য।
ছেলের কথামতো বাজারে মাছ আনতেও গিয়েছিলেন অভিকের মা। তারপর বাড়িতে এসে যা দেখলেন,তাতেই মায়ের চক্ষু চড়ক গাছ। বাড়িতে এসে দেখেন ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। বেশ কয়েকবার দরজা খোলার কথা বলা হলেও দরজা না খোলায় জানালা দিয়ে উঁকি দেন মা। তখনই দেখেন ফ্যানের সাথে ওড়না জড়ানো অবস্থায় ঝুলছে অভীকের দেহ। চিত্কার করে ওঠেন তাঁর মা। তার আর্তনাদে আশেপাশের মানুষজন এবং বন্ধু-বান্ধবরা ছুটে এসে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন অভীককে। এরপর মৃতদেহ পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য। আজ ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।
ঘটনার পর আত্মহত্যার খবর পেয়ে ভক্তিনগর থানার আশিঘর ফাঁড়ির পুলিশ, সেই বাড়িতে পৌঁছয়। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছিল অভীক। আর সেই নেশায় পড়ে বাবার প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচও করে ফেলেছিল সে। তারপরই বাবাকে কী উত্তর দেবেন সেই ভয়েই সম্ভবত আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে বলে পুলিশের অনুমান। ঘটনার তদন্তে রয়েছে পুলিশ।