• ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টিতে আমের গুটি ঝরে ক্ষতির শঙ্কা চাষিদের
    বর্তমান | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: ঘুর্ণাবর্তের জেরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের মাঝে মালদহে বাজ পড়ে মৃত্যু হল দু’জনের। মৃতদের মধ্যে একজনের নাম কৃষ্ণ দাস (২৩)। তিনি ইংলিশবাজার ব্লকের মহদীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একে গোপালন কলোনির বাসিন্দা। অপরজন বিফিয়া চৌধুরী (১৫) মানিকচক ব্লকের নারায়ণপুর চরে থাকত।

    বৃহস্পতিবার সকাল ন’টার পর বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয় ইংলিশবাজার, পুরাতন মালদহ, হবিবপুর, বামনগোলা, মানিকচক ও কালিয়াচকে। তবে রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচলে এদিন ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রপাত হয়। 

    এদিন মহদিপুর স্থল বন্দরের কাছে লরিতে পাথর বোঝাই করার সময় বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় কৃষ্ণ দাসের। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এদিন মৃতের দাদা আস্তিক দাস বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমার ভাই বাড়ির অদূরেই মহদিপুর স্থল বন্দরে যাওয়ার রাস্তার ধারে লরিতে পাথর বোঝাইয়ের কাজ করছিল। সেই সময় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আমার ভাই একটি লরির নীচে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেই সময় বাজ পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচকে বাজ পড়ে নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। 

    আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার এবং সংলগ্ন অঞ্চলে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। তার প্রভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয় বাষ্প বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে স্থলভাগে প্রবেশ করছে। ফলে তারই প্রভাবে বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। আবহাওয়া দপ্তরের উত্তরবঙ্গের কো-অর্ডিনেটর গোপীনাথ রাহা বলেন, আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাত চলবে। কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 

    টানা কয়েকদিন গরমে হাঁসফাঁস করার পর বৃষ্টিপাতের ফলে এদিন ইংলিশবাজার সহ মালদহের আবহাওয়া অনেকটাই আরামদায়ক ছিল। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এদিন ইংলিশবাজারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে যা ৩ ডিগ্রি কম বলে জানা গিয়েছে। 

    এদিকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে হওয়া মাঝারি বৃষ্টিপাতের ফলে মালদহের বহু বাগানেই আমের গুটি ঝরে গিয়েছে। বৃষ্টিপাতের জেরে সার্বিক ভাবে আমের ফলন ভালো হলেও প্রথম দিকে বাজারে আসা বেশকিছু আমের সামান্য ক্ষতি হতে পারে বলে উদ্যান পালন দপ্তরের আশঙ্কা। উদ্যান পালন দপ্তরের সহকারী অধিকর্তা পৃথা সরকার বলেন, মালদহে প্রচণ্ড গরম শুরু হওয়ায় আমের ক্ষতি হচ্ছিল। ফলে এই বৃষ্টিটা আম চাষের জন্য লাভদায়ক হয়েছে। তবে লক্ষণ ভোগ, গোপাল ভোগ, হিমসাগরের মতো যেসব আম প্রথম দিকে বাজারে আসে, সেগুলির গুটি ঝরে গিয়েছে। ফলে যতটা পরিমাণ উৎপাদন হবে বলে আমরা আশা করছিলাম, তার থেকে ২-৩ শতাংশ ফলন কমতে পারে।  ঝরে পড়েছে কাঁচা আম। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)