• শিক্ষকদের অসম বণ্টন, করিমপুরে বহু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনে সমস্যা
    বর্তমান | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: উচ্চবিদ্যালয়ের পাশাপাশি করিমপুরের বহু প্রাথমিক বিদ্যালয়েও পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব রয়েছে। শিক্ষকদের অসম বণ্টনের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কোনও স্কুলে ৫০জন ছাত্রছাত্রীর জন্য তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। আবার কোনও স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১০০হলেও পড়ানোর জন্য রয়েছেন দু’জন শিক্ষক।

    শিক্ষাদপ্তর জানিয়েছে, করিমপুর চক্রে ৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই সমস্ত বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ন’হাজার পড়ুয়া এবং ৩৪৮জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। এই চক্রের ৫২টি স্কুলে পাঁচজনের কম শিক্ষক রয়েছেন। নয়টি স্কুলে ছয়জন করে শিক্ষক আছেন। দু’টি স্কুলে সাতজন করে, দু’টি স্কুলে ন’জন করে শিক্ষক রয়েছেন। একটি স্কুলে আটজন ও আর একটি স্কুলে ১৫জন শিক্ষক আছেন।

    এবিষয়ে করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোমদেব মজুমদার বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যে সমস্ত স্কুলে ১৫০জনের কম পড়ুয়া রয়েছে, সেখানে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ৩০জন পিছু একজন শিক্ষক। পড়ুয়াসংখ্যা তার বেশি হলে ৪০জন পিছু একজন শিক্ষক। অনুপাত হিসেবে তেমন ঘাটতি নেই। তবে প্রতি স্কুলে কমপক্ষে পাঁচটি শ্রেণি রয়েছে। সেকারণে অনেক স্কুলে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

    ভারোল জিএসএফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২১জন পড়ুয়া রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি ইউনিট আছে। কিন্তু সেখানে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। স্কুলের একমাত্র প্রধান শিক্ষক গতবছর আগস্ট মাসে অবসর নিয়েছেন। তারপর এক শিক্ষককে অন্য স্কুল থেকে সাময়িকভাবে বদলি করে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একা চারটি শ্রেণির ক্লাস নিতে তিনি খুবই সমস্যায় পড়ছেন।

    জোতদর্প নারায়ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯২জন পড়ুয়াকে পড়াচ্ছেন মাত্র দু’জন শিক্ষক। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ বলেন, ফেব্রুয়ারিতে দু’জন শিক্ষক অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তারপর থেকে এই সমস্যা শুরু হয়েছে। পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও দু’জন শিক্ষককে সব সামলাতে হচ্ছে। আমাদের মধ্যে কেউ একজন কোনও কারণে স্কুলে না আসতে পারলে সেদিন স্কুল অচল হয়ে যায়। তাই আমরা ছুটিও নিতে পারি না। সমস্যার কথা শিক্ষাদপ্তরের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও জানানো হয়েছে।

    আবার করিমপুর জিএসএফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৪৪জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ন’টি শ্রেণিকক্ষ আছে। সেখানে শিক্ষক রয়েছেন ১৫জন। শিক্ষকরা অনেকেই জানান, নতুন শিক্ষক কবে নিয়োগ হবে তার ঠিক নেই। তবে যেসব স্কুলে এরকম বাড়তি শিক্ষক আছে, সেখান থেকে কয়েকজনকে অন্যত্র বদলি করা যেতে পারে। তাতে যে সব স্কুল শিক্ষক সঙ্কটে ধুঁকছে, সেগুলির কিছুটা হলেও হাল ফিরবে। অভিভাবকরা জানান, অনেক স্কুলেই অল্প সংখ্যক শিক্ষক সমস্ত ক্লাস ঠিকমতো নিতে পারেন না। ফলে স্কুলে পড়ুয়াদের ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না।
  • Link to this news (বর্তমান)