• পুরসভার সঙ্গে ন’বার বৈঠকেও বাড়েনি বেতন, জেলাশাসকের দ্বারস্থ সাফাইকর্মীরা
    বর্তমান | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: একবার, দু’বার নয়, ন’বার বৈঠক হয়েছে পুরসভার সঙ্গে। প্রতিবারই মিলেছে আশ্বাস। কিন্তু আজও বেতন বাড়েনি অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের। ফলে এবার পুরসভার উপর ‘আস্থা’ হারিয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনও তাঁদের দাবি পূরণে সচেষ্ট না হলে শহরে সাফাইয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

    জলপাইগুড়ি সাফাই কর্মচারি একতা মঞ্চের সভাপতি প্রতাপ রাউতের দাবি, গত বছরের জুলাই মাস থেকে তাঁরা বেতন বৃদ্ধি সহ অন্যান্য দাবিতে আন্দোলন করে চলেছেন। পুরসভার সঙ্গে ন’বার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন তাঁরা। প্রতিটি বৈঠকে তাঁদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের এক টাকাও বেতন বৃদ্ধি হয়নি। তাছাড়া ইপিএফের দাবি রয়েছে। সেটিও চালু করা হয়নি। স্থায়ী সাফাইকর্মীরা অবসরের পরও গ্র্যাচুইটি পাচ্ছেন না। দাবি পূরণে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার আর্জি রেখেছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা দেখতে ১৫ দিন অপেক্ষা করবেন তাঁরা। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। প্রয়োজনে শহরে সাফাইয়ের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন তাঁরা।

    জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পালের বক্তব্য, সাফাইকর্মীদের দাবি পূরণের ব্যাপারে আমরা যথেষ্টই আন্তরিক। তাঁদের সঙ্গে অনেকগুলি বৈঠক হয়েছে। শেষ বৈঠকও ইতিবাচক হয়েছিল। আমরা কথা দিয়েছিলাম, এপ্রিল মাসের পর থেকে ধাপে ধাপে তাঁদের দাবি পূরণে সচেষ্ট হব। কিন্তু তারপরও তাঁরা জেলাশাসকের দপ্তরে স্মারকলিপি দিতে গেলেন কেন, বুঝতে পারছি না। 

    জলপাইগুড়ি পুরসভায় ৩১৮ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে ১৬৩ জন সাফাইয়ের কাজে যুক্ত। বাকিরা কেউ পানীয় জল সরবরাহ দপ্তরে, কেউবা ট্রাক্টর চালান, কেউ আবার বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজে নিযুক্ত। অস্থায়ী এই কর্মীদের অনেকে পাঁচ-সাত বছর ধরে কাজ করলেও মাসে ৩৯০০ টাকা বেতন পান বলে দাবি। এমনকী ইপিএফের আওতায় নিয়ে আসা হয়নি তাঁদের। 

    জলপাইগুড়ি সাফাই কর্মচারি একতা মঞ্চের সভাপতি প্রতাপ রাউতের দাবি, সরকারি অফিসে অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের ন্যূনতম ৪৫৯৪ টাকা দেওয়ার নিয়ম করেছে। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের ৫৩০০ টাকা বেতন দেওয়ার কথা। কিন্তু জলপাইগুড়ি পুরসভায় তা মিলছে না। তাঁর দাবি, আগে সাফাই বিভাগে স্থায়ী কর্মীরা কাজ করতেন। এখনও ২৬ জন স্থায়ী সাফাইকর্মী রয়েছেন। অবসরের পরও তাঁরা গ্র্যাচুইটির টাকা পাচ্ছেন না। আবেদনের ৩০ দিনের মধ্যে গ্র্যাচুইটির টাকা দেওয়ার নিয়ম। জলপাইগুড়ি পুরসভার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, স্থায়ী সাফাইকর্মীরা অবসর নেওয়ার দশ বছর পরও গ্র্যাচুইটির টাকা না পাননি। রোজই তাঁদের পুরসভায় এসে হত্যে দিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। অনেকে মারাও গিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)