• উপদ্রুত এলাকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে, বলল হাইকোর্ট
    বর্তমান | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। বৃহস্পতিবার নির্দেশে এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে মৌখিকভাবে একটি কমিটি গঠনের কথাও বলেছে বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদে আশান্তির জন্য এদিনও বিএসএফ তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপর তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘অশান্তি পাকিয়েছে বহিরাগতরা। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব বিএসএফের। তারা কী করছিল?’

    এরমধ্যেই এদিন মুর্শিদাবাদের যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এখনই তাঁকে মুর্শিদাবাদ না যাওয়ার অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘শান্তির বাতাবরণ ফিরে এসেছে। এটা কনফিডেন্স বিল্ডিংয়ের সময় সেই কাজ প্রশাসন করছে। আমিও যেতে পারতাম। কিন্তু যাচ্ছি না। আমি রাজ্যপাল মহাশয়কে অনুরোধ করব। দয়া করে কিছু দিন অপেক্ষা করুন।’ 

    এছাড়াও মুর্শিদাবাদের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাইরে থেকে কেউ কেউ এসে অশান্তি পাকিয়েছে। ভয়ও দেখাচ্ছে।’ মুর্শিদাবাদের হিংসা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও এদিন সন্ধ্যাতেই মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন রাজ্যপাল। এমনকী, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলও আসতে পারে বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হোম মিনিস্টারকে ত্রিপুরা, মণিপুর যেতে বলুন। অসমে যেতে বলুন। ত্রিপুরা-অসম-মণিপুর আমাদের হাতে নেই। বর্ডারও আমাদের হাতে নেই। এটা মনে রাখবেন।’ মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ‘আগে বর্ডারের পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত বিএসএফের হাতে ছিল। বর্তমান হোম মিনিস্টার আইন করে ৫০ কিলোমিটার করে দিয়েছেন। অর্থাৎ আমাদের মানুষ থাকলেও, আমরা গিয়ে দেখা করতে পারি না। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না।’

    ওয়াকফ আইন ঘিরে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক আন্দোলনে মুর্শিদাবাদের সূতি, সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ান এলাকাগুলি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথভাবে কাজ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, কত দিন উপদ্রুত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এদিন অবশ্য হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এছাড়া মৌখিক নির্দেশে হাইকোর্ট জানিয়েছে, ঘরছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরে ফেরাতে যে কমিটি গঠন করা হবে, তাতে থাকবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিসেস কমিটির এক জন করে সদস্য। ঘরছাড়াদের পুনরায় ঘরে ফেরানোই কমিটির মূল লক্ষ্য হবে বলেও জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এছাড়াও আদালত জানিয়েছে, হিংসায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।  
  • Link to this news (বর্তমান)