• টাকার অভাবে জেলে কল ব্লকিংয়ের  উন্নত সিস্টেমের কাজ বিশ বাঁও জলে
    বর্তমান | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা:  পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তাই রাজ্যের জেলগুলিতে মোবাইল ফোনের ব্যবহার আটকাতে টাওয়ার-হারমোনিয়াস কল ব্লকিং সিস্টেম (টি-এইচসিবিএস) বসানোর প্রকল্প কার্যত বিশ বাঁও জলে। যদি একান্তই এই সিস্টেম চালু করা না যায় তাহলে পুরনো পদ্ধতিকে আপগ্রেড করার উপরই জোর দিতে চাইছেন জেলের কর্তারা। যেভাবে মোবাইলে প্রযুক্তির আপডেট হচ্ছে তারপর কতদিন মান্ধাতার আমলের সিস্টেম দিয়ে কাজ চালানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

    জেল থেকে অপরাধীরা নিজেদের গ্যাংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তাদের অনুগামীদের দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় লুট, ডাকাতির মতো অপরাধ করাচ্ছে। এমনকী জেল থেকে তোলা চেয়ে হুমকি ফোন যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। মোবাইলের প্রযুক্তি আপডেটেড হওয়ায় সেল থেকে ভিডিও কল করে বাড়িতে কথা বলছে সাজাপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন বন্দিরা। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কও হয়েছে। শুধু বাংলারই জেল নয়, ভিন রাজ্যের জেলেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ওই কারণে বছর দুই আগে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে টি-এইচসিবিএস চালু করতে হবে। আধুনিক এই জ্যামার ২-জি থেকে ৫-জি প্রযুক্তি ব্লক করতে অত্যন্ত  কার্যকর। প্রযুক্তি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে প্রথাগত জ্যামার সিস্টেম দিয়ে জেলে মোবাইলের ব্যবহার আটকানো সম্ভব কার্যত অসম্ভব। এই জ্যামার দিয়ে মোবাইলে সিগন্যাল ব্লক করা সম্ভব নয়। আর জেলের দেওয়াল মোটা হলে পুরনো পদ্ধতি কার্যকর নয়।

    সংশোধনাগার সূত্রের খবর, ওই কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সমস্ত রাজ্যকে টি-এইচসিবিএস চালু করার পরামর্শ দেয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, এই প্রযুক্তিকে সমস্ত ধরনের সিগন্যাল ব্লক করে দেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি জেলের অফিসারদের নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্য যে-সমস্ত নম্বর রয়েছে সেগুলি আলাদাভাবে এই সিস্টেমে আপলোড করা সম্ভব। তাই আধিকারিকদের কল করা অসুবিধা হবে না। সেইমতো বারুইপুর জেলকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ধরা হয়। কোন কোন জায়গায় এই টাওয়ার বসানো হবে তার জন্য জায়গাও দেখেন আধিকারিকরা। ধাপে ধাপে অন্য কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার ও জেলা সংশোধনাগারে বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। 

    কিন্তু এর জন্য আনুমানিক এক-একটি জেলে ৩০ কোটি টাকার মতো খরচ হবে বলে জেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। আর এখানেই সমস্যা দেখা দেয়। রাজ্যের প্রতিটি জেলে এই প্রযুক্তির জ্যামার বসাতে গেলে যে পরিমাণ টাকা দরকার তা তাঁদের কাছে নেই। সূত্রের খবর, এই নিয়ে রাজ্য অর্থদপ্তরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলেও তারা প্রয়োজনীয় টাকা দেয়নি। ওই কারণে এই প্রযুক্তি বসানোর কাজ ভুলতে বসেছেন কারা-কর্তারা। তাই পুরনো পদ্ধতির জ্যামারকে আরও সক্রিয় করে সিগন্যাল আটকানোর রাস্তাতেই যেতে হচ্ছে তাঁদের।

          
  • Link to this news (বর্তমান)