সমীর মণ্ডল, মেদিনীপুর
আদালতের বৃহস্পতিবারের নির্দেশে খুশি নন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের কথায়, স্থায়ী সমাধানই চেয়েছিলেন সকলে। কিন্তু তা হলো না। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিল আদালত। কিন্তু তার পর কী হবে তা নিয়ে সংশয়ে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
তাঁদের কথায়, ‘একটা জিনিস বোঝা গেল। কবে আমাদের চাকরি যাচ্ছে। প্রতিদিন দুশ্চিন্তা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি। প্রতিটি দিন স্কুলে গিয়ে মনে হবে চাকরির মেয়াদের একটি দিন চলে গেল! তারপর পরীক্ষা কী হবে, কী ভাবে হবে, কারা পরীক্ষা দেবেন, নিয়োগের পরীক্ষায় ফের যে দুর্নীতি হবে না তা কে বলবে!’
এই পরিস্থিতিতে যোগ্য-অযোগ্য নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। কারা যোগ্য, আর কারা অযোগ্য তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন আদালতে জানিয়েছে, ২০১৬ সালের প্যানেলের ২৬ হাজারের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার অযোগ্য শিক্ষক তাঁরা চিহ্নিত করেছেন। যোগ্য শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবি তোলা হচ্ছে বার বার। যদিও সেই তালিকা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষকেরা দাবি করছেন, আগে অযোগ্যদের চাকরি থেকে টার্মিনেট করা হোক।
গড়বেতার ব্যানার্জীডাঙ্গা হাইস্কুলের চাকরিহারা গণিতের শিক্ষিকা আতেকা বানু বলেন, ‘আমরা সামায়িক স্বস্তি চাই না। আমরা স্থায়ী সমাধান চেয়েছিলাম। আমাদের দাবি ছিল সসম্মানে আমাদের স্কুলে ফেরানো হোক। এ তো ক্যান্সার প্রেশেন্টকে মৃত্যুর দিন জানিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। এই নির্দেশের সাড়ে আট মাস হয়তো স্কুলে যেতে পারব। কিন্তু মনের মধ্যে সেই অশান্তি থাকবেই।’
স্কুলে যাওয়া না যাওয়া প্রসসঙ্গে আতেকা বলেন, ‘সংগঠনে কী সিদ্ধান্ত হয় তা দেখব।’ কেশপুরের আন্দিচক হাইস্কুলের চাকরিহারা শিক্ষক অতনু দত্ত বলেন, ‘আসলে এতে আবার পরীক্ষা হবে, তাতে কে কোথায় কী পাবে কেউ জানেন না। স্বাভাবিক ভাবে আমাদের নিজেদের ভালোর জন্যেই নিজেদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভাবতে হবে, এখানে থাকব, না আগের মাদ্রাসার চাকরতে ফিরে যাব। এত কষ্ট আর সইতে পারছি না। বাড়ির লোকেদের সময় দিতে পারছি না, হাঁফিয়ে উঠেছি। তবে আপাতত স্কুলে যাব।’