দিগন্ত মান্না, পাঁশকুড়া
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানোর পরের দিনই সিবিএসই স্কুলে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন। মোট তিনটি স্কুল থেকে পেয়েছিলেন অফার লেটার। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম-রায়ে স্বস্তি পেয়েছেন তিনি। সোমবার থেকে স্কুলেও যাবেন তিনি। তবে মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষায় আর বসতে রাজি নন পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা কৃষ্ণচরণ বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষিকা শিবারতি দেববর্মণ।
তাঁর প্রশ্ন, ‘মেধার প্রমাণ দেওয়ার পরেও চাকরি চলে গিয়েছিল। নতুন মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষা স্বচ্ছ ভাবে হবে তার নিশ্চয়তা কী?’ এ রাজ্যে মেধা তো রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ করছে। সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শিবারতি।
মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা শিবারতি ২০১৯ সালে পাটনা কৃষ্ণচরণ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগ দেন। গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারান তিনি। চাকরি হারানোর পরের দিনই অনলাইনে ইন্টারভিউ দিয়ে সিবিএসই স্কুলে চাকরি পান। চারদিনে তিনটি ইন্টারভিউ দিয়ে তিন জায়গাতেই সফল হন শিবারতি।
৯ এপ্রিল স্কুলে এসে সহকর্মী এবং ছাত্রীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে গিয়েছিলেন। সামনের সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডের একটি স্কুলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী স্কুলে যোগ দিতে পারবেন শিবারতিও। কারণ, তাঁর নাম ‘দাগি’দের তালিকায় ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীস্কুলে যোগ দেবেন শিবারতি।
বেসরকারি স্কুলে আর যোগ দিচ্ছেন না। কিন্তু নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তিনি অংশ নিতে রাজি নন। মেধার জোরে চাকরি পাওয়ার পরেও চাকরি হারানোয় রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর আর ভরসা রাখতে পারছেন না এই শিক্ষিকা। আপাতত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে স্থায়ী শিক্ষিকা পদে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি।
চাকরি বাতিলের ঘটনায় রাজ্য সরকারের পাশাপাশি বিচার ব্যবস্থার প্রতিও আর আস্থা রাখতে পারছেন না শিবারতি। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের সুপ্রিম কোর্ট ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাড় দিল। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি’তে কি কেউই যোগ্য ছিলেন না? তাঁদের কথা ভাবা হলো না কেন? তাঁদের সঙ্গে তো অবিচার করা হলো। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমি অযোগ্য নই। তা হলে আবার পরীক্ষা দিতে যাব কেন? কতবার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে? পশ্চিমবঙ্গের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর আর ভরসা নেই। মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষা স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?’