• ‘সুপ্রিম রায়ে যদি চাকরিটা ফেরত পেতাম...’ , আক্ষেপ চাকরিহারা শিক্ষকদের
    এই সময় | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • প্রদীপ চক্রবর্তী, চুঁচুড়া

    ‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তো চাকরি চলেই গিয়েছে। সেই চাকরি তো ফেরত পাইনি। তাই দুশ্চিন্তা, যন্ত্রণা তো রয়েই গেল। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত যোগ্যদের আপাতত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় আমাদের লড়াই কিছুটা অক্সিজেন পেলো, সেটা বলা যায়। কিন্তু এর পরেও আমরা আইনি লড়াই লড়ব। কিউরেটিভ জমা দেব।’ সুপ্রিম রায় বেরোবার কিছুক্ষণ পরে বৃহস্পতিবার এ ভাবেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন চণ্ডীতলার বেগমপুর হাইস্কুলের শিক্ষক প্রসেনজিৎ বালা।

    তিনি এ দিন বলেন, ‘ছাত্রদের কথা চিন্তা করে এ দিনও আমি স্কুলে এসেছি। যোগ্য শিক্ষক হয়েই আজীবন স্কুলে পড়াতে চাই। আমরা চাই, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকুক। আদালতের রায় সাময়িক স্বস্তি দিলেও, চাকরি ফেরত পাইনি। তাই দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।’

    তবে আদালত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ভেবে আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে বলায় আদালত অবমাননার দায় নিতে হবে না বলে জানিয়েছেন বাঁশবেড়িয়া হাইস্কুলের অঙ্কের শিক্ষক নির্মল গড়াই।

    সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার পরে তিনি বলেন, ‘সোমবার থেকে স্কুলে যাব। আমরা চাই, স্কুল সার্ভিস কমিশন আমাদের সমস্যা দ্রুত মেটাক। আদালতের নির্দেশে এককথায় চাকরি চলে গিয়েছে, এটাই চরম সত্যি। সেই আদালতের নির্দেশেই যদি চাকরিটা ফেরত পেতাম, সেটাই বড় পাওয়া হতো।’ শ্রীরামপুর গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা সঞ্চিতা সোরেন বলেন, ‘এই অবস্থাতেও স্কুলের ছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়েছিলাম। তাই খাতা দেখব ও সোমবার স্কুলেও যাব।’

    এ দিন শীর্ষ আদালত স্কুলে যাওয়ার সাময়িক ছাড়পত্র দিলেও, যোগ্য–অযোগ্যদের জট কাটানো যায়নি।অযোগ্যরাও কী স্কুলে যাবে? এই ধোঁয়াশা স্পষ্ট শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মনে। ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে আশঙ্কায় বাংলার শিক্ষিকা আবীরা দাস বলেন, ‘২০১৬ সালে যখন পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলাম, তখন অবিবাহিত ছিলাম। পড়াশোনা নিয়েই থাকতাম। চাকরি করেছি প্রায় ৮ বছর। এখন বিয়ে করেছি। মেয়ে আছে। এত কিছুর পরে চাকরি বাঁচাতে কি নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে চাকরি পাওয়া সম্ভব? বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মেধারও ঘাটতি দেখা দেয়। সুতরাং আইনের পথেই ফিরতে পারে সুরক্ষিত চাকরি। আমরা একমাত্র তখনই স্বস্তি পাবো।’

  • Link to this news (এই সময়)