• আমরা সবাই কি অযোগ্য? প্রশ্ন ক্ষুব্ধ শিক্ষকর্মীদের
    এই সময় | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর: বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাময়িক স্বস্তিতে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকরা। কিন্তু ২০১৬ সালের প্যানেলের সমস্ত গ্রুপ–সি এবং গ্রুপ–ডি কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ বহাল রাখল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শিক্ষাকর্মী মহলে। চাকরি বাতিলের তালিকায় একজনও কি যোগ্য শিক্ষাকর্মী নেই? উঠছে প্রশ্ন। ক্ষোভের মধ্যেও মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষার দিকে তাকিয়ে হাজার হাজার অশিক্ষক কর্মচারী।

    ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় ৬০০ জন গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মী চাকরি হারান। এ দিন পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য শিক্ষকদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও শিক্ষাকর্মীদের আগের রায়ই বহাল রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী মহলে।

    পাঁশকুড়ার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক চাকরিহারা একজন গ্রুপ-ডি কর্মচারী বলেন, ‘মেধার জোরে চাকরি পেয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের মতো আমাদেরও ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চাকরি চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলে ভালো হত।’

    পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংবনী হাইস্কুলের চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী সুদীপ্তচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষকদের যে অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিল করেছিল শিক্ষাকর্মীদেরও সেই একই অভিযোগে চাকরি বাতিল হয়েছিল। আমাদের মধ্যে যোগ্য–অযোগ্য দুই–ই আছে। তা হলে যোগ্য শিক্ষাকর্মীদের কেন স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলো না? এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন? আদালতের রায়ের উপর তো কিছু বলার নেই। অন্যের পাপের ফল ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের।’

    নদিয়ার চাকদহ এলাকার সুদেব সরকার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্কুলে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা হওয়ার পর মেদিনীপুর থেকে নদিয়ার বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে হতাশ সুদেব। তিনি বলেন, ‘ন’মাস পর তো সবার চাকরি যাবে। নতুন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

    জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম জেলায় ৩০ জন গ্রুপ-সি এবং ১১৪ জন গ্রুপ-ডি কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন। রান্টুয়া হাইস্কুলের চাকরিহারা গ্রুপ-ডি কর্মী রিয়া মণ্ডল বলেন, ‘যোগ্য শিক্ষকেরা যদি স্কুলে ফিরতে পারে তা হলে আমরা কেন ফিরতে পারব না? আমাদের সাথে অন্যায় হলো। আমরাও স্কুলে ফিরতে চাই। আমরাও নিজেদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি।'

  • Link to this news (এই সময়)