বুদ্ধদেব বেরা
উঠোনে বঁটিতে আম কাটছিলেন বাড়ির ছোট বৌ গঙ্গা ঘোষ। কর্তা বসে সামনের প্লাস্টিকের চেয়ারে। গোপীবল্লভপুরের ২ নম্বর ব্লকে কুলিয়ানা গ্রামে সুবর্ণরেখা নদীর অদূরে দোতলা পাকা বাড়িটায় আজ হইহই হয়ত নেই, কিন্তু পরিবারের লোকজনের মেজাজ ফুরফুরে। এ দিকে প্রতিবেশীরাও ভিড় জমাচ্ছেন। কৌতুহল চেপে রাখার ‘পাপ’ তাঁরা করতে নারাজ। ভেসে আসছে প্রশ্ন, ‘নাড়ু বিয়ে করছে?’
গোটা দেশের কাছে তিনি পরিচিত দিলীপ ঘোষ নামে। কিন্তু পাড়াতুতো কাকু, কাকিমা, দাদু, ঠাকুমা সকলেই রাজ্য BJP-র প্রাক্তন সভাপতিকে চেনেন নাড়ু নামেই। মা পুষ্পলতা ঘোষ একসময়ে তাঁকে হামেশাই বলতেন, ‘বিয়েটা কর’। তা পাড়ার লোকের অজানা নয়। সেই ‘অবাধ্য’ নাড়ুই যে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাধ্য ছেলে হয়ে রেজিস্ট্রারের সামনে সই করে বিয়ে সারবে, ঘরে বৌ আনবে, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না পাড়ার লোকজন। তবে মিটিমিটি হাসি দিলীপের ছোট ভাই হীরক এবং তাঁর স্ত্রী গঙ্গা ঘোষের ঠোঁটে। দু’জনেই বেজায় খুশি।
হীরক ঘোষ ‘এই সময় অনলাইন’-কে বলেন, ‘দাদা চমকে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত আগেও নিয়েছেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত বৌদির হাত ধরে দাদা ঘরে আসছে, ততক্ষণ বিশ্বাসই করতে পারছি না।’ হতবাক হীরকের স্ত্রী গঙ্গাও। গ্রামের বাড়ির উঠোনে আম কাটতে কাটতে তিনি বলেন, ‘মা (শাশুড়িমা) কতবার বলেছেন দাদাকে বিয়ে করার জন্য। সে কথা কানেই তুলত না। হঠাৎ জন্মদিনের আগে সুখবর। আমরা সবাই খুশি।’
তবে বিয়ের জন্য গ্রামের বাড়িতে আলাদা করে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না। নিউটাউনে দিলীপ ঘোষের বাড়িতেও বিশেষ আড়ম্বর নেই। তবে লোকজনের আনাগোনা রয়েছে। VIP অতিথি তালিকায় রয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। আর গ্রামের বাড়িতে ভিড় পাড়ার লোকজনের। সুখবর শুনে সকলের একটাই দাবি, ‘এ বার কিন্তু মিষ্টিমুখ করাতে হবে…’।