চিত্তরঞ্জন দাস: রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী! কিন্তু তাতে কী? দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বিয়েতে আনন্দে মেতে উঠতে বাধা কোথায়? এটাই তো সৌজন্য! আর সেই সৌজন্যই দেখালেন তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ (Kirti Azad)।
একদা দিলীপকে হারিয়ে জেতা কীর্তি আজাদ, এখন তৃণমূল সাংসদ, দিলীপের বিয়ের খবরের আনন্দে মজলেন। আনন্দে মজলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, আর তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন কীর্তি আজাদ। এই দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ একে অপরকে তীব্র আক্রমণ করলেও দু'জন দু'জনের প্রতি কোনও অশালীন মন্তব্য প্রয়োগ করেননি বলেই জানে সকলে। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের দিনে বর্ধমানের এই দুই প্রতিপক্ষ মুখোমুখি হয়ে করেছিলেন কোলাকুলিও।
নির্বাচনে অবশ্য কীর্তি আজাদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন দাপুটে দিলীপ ঘোষ। কিন্তু সেই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা 'শত্রুতা' দিলীপের বিয়ের খবরে কীর্তির আনন্দ প্রকাশে অন্তরায় হয়নি। আজ, শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার নিউটাউনের বাড়িতে রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন দিলীপ ঘোষ। আর সেই খবর পেতেই বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজাদ উল্লাসে মাতলেন। 'মেরে ইয়ার কি শাদী হ্যায়' গানের তালে গলাও মেলালেন। তৃণমূল কর্মীদের মিষ্টিমুখের ব্যবস্থা করলেন। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বসে চা-ও খেলেন।
কী বললেন কীর্তি আজাদ?
কীর্তি আজাদ বললেন, 'নতুন বৌদি আর দিলীপদাকে হার্দিক অভিনন্দন। নতুন জীবন সুখের হোক। আমরা একে অপরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও বিবাহ জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দিলীপদার বিবাহে শুভেচ্ছা জানানো আমার কর্তব্য। আমি আশা করব, এর পর থেকে দিলীপদা ''জয় সিয়ারাম'' বলবেন!'
প্রসঙ্গত, আর এক তৃণমূল নেতাও দিলীপের বিয়েতে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, '৬১ বছর বয়সে দিলীপদা যে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন, তাতে আমি খুবই আনন্দিত। বিয়েতে নেমন্তন্ন করলে খুব ভালো হত। বিয়েতে খাওয়া-দাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল।' শুক্রবার সকালে এমনই বললেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা (Saokat Molla)। তিনি আরও বলেন, 'দিলীপদাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। যেভাবে উনি এতদিন ব্যাটিং করেছেন, যে ইনিংসটা খেলেছেন, সেই ইনিংস আর এই ইনিংসটার মধ্যে অনেকটা তফাত আছে। এই তফাতটা ওঁকে প্রথমে বুঝতে হবে।'
আর যোগ করেন শওকত। বলেন, 'এতদিন পরে যে শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে, তার জন্য দিলীপদাকে শুভেচ্ছা রইল। ওঁর দাম্পত্যজীবন খুব সুখের হোক। যদি আমাদের একটু নেমন্তন্ন করতেন, তাহলে খুব ভালো হত। ওঁর বিয়েতে খুব খাওয়ার ইচ্ছা ছিল। ওঁর জন্য শুভেচ্ছা রইল। ওঁর একজন সহকর্মী আছেন, তাঁর মাথা খারাপ।' সঙ্গে শওকত বলেন, এবার তাঁর বিষয়টা একটু ভাবার জন্য দিলীপদাকে অনুরোধ রইল।' নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর সম্বন্ধে এই কথা বলেন শওকত।
প্রসঙ্গত, দিলীপের পাত্রীর নাম রিঙ্কু মজুমদার। তিনি দীর্ঘ দিনের বিজেপিকর্মী। মহিলা মোর্চার দায়িত্বও সামলেছেন। ওবিসি মোর্চা এবং হ্যান্ডলুম সেলের দায়িত্বেও ছিলেন। বিজেপি করার সূত্রেই ৪৭ বছর বয়সী রিঙ্কুর সঙ্গে আলাপ হয় ৬১ বছরের দিলীপের। সেই আলাপই শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিণতি পেতে চলেছে।