• 'মন্দির-মসজিদের রাজনীতি ঘিরে যে অস্থিরতা, সেটা কষ্ট দেয়'! তাই রাষ্ট্রপতি সম্মান ফেরাচ্ছেন ইয়াসিন...
    ২৪ ঘন্টা | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'কাজ অবশ্য এখনও অনেক বাকি। তবে এখন আর শরীর সঙ্গ দেয় না। ... এর মধ্যে এভাবে ভাইয়ে ভাইয়ে ভেদাভেদ, সংঘর্ষ দেখলে কষ্ট লাগে। তাই ঠিক করেছি রাষ্ট্রপতির দেওয়া কবীর সম্মান ফিরিয়ে দেব।'-- এরকম একটা পোস্ট কদিন আগে নড়িয়ে দিল অনেকে, ছুঁয়ে দিল অনেকের মন। সারা দেশে সম্প্রীতি ও ঐক্য ধ্বংস হচ্ছে রাজনীতির জন্য-- এই অভিযোগ তুলে 'কবীর সম্মান ' পুরস্কার ফেরত দিতে চাইলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পাথরার ইয়াসিন পাঠান।

    ফিরে দেখা জরুরি। কী ঘটেছিল? ইয়াসিন পাঠান? সালটা ছিল ১৯৯৪। সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শংকরদয়াল শর্মার হাত থেকে 'কবীর সম্মান' পেয়েছিলেন ইয়াসিন পাঠান (Yasin Pathan)। তারপর সময়টা অনেক গড়িয়ে গিয়েছে। এখন, এই ২০২৫ সালে এসে তিনি এবার সেই সম্মান ফেরাতে চলেছেন। কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্ট করে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।

    ইয়াসিন পাঠানের জন্ম মুসলিম পরিবারে। কিন্তু মুসলিম হয়েও খুব ছোট থেকেই তিনি প্রাচীন হিন্দু মন্দির সংরক্ষণ করার কাজটিকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন। শুরুতে তাঁর এই যাত্রা মসৃণও ছিল না। কিন্তু সব কিছু উপেক্ষা করে মেদিনীপুর শহরের একটু দূরে কংসাবতীর পাড়ে পাথরায় তাঁর হাতেই প্রাণ ফিরে পেয়েছিল ভেঙে পড়া প্রায় ৪২টি প্রাচীন হিন্দুমন্দির। বেঁচে গিয়েছিল প্রাচীন ও বিরল মন্দিরস্থাপত্য।

    বাহাত্তরটি বসন্ত পার করে এসেছেন। কিন্তু নিজের গোটা জীবনে যিনি কখনও হিন্দু-মুসলিমে ফারাক করেননি, তিনি কীভাবে 'এই সময়ের এই আবহ'কে মেনে নিতে পারবেন? কোন 'সময়'? তাঁর দাবি, মন্দির-মসজিদের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে যেভাবে এখন একাধিক জায়গায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, সেটা তাঁর না-পসন্দ। সেটা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না ইয়াসিন। মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।

    তাঁর মর্মস্পর্শী পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'বাহান্ন বছর ধরে ধ্বংসপ্রাপ্ত ৪২টি প্রাচীন মন্দিরস্থাপত্য রক্ষা করে বড়ই ভুল করে ফেলেছি। ক্ষমা করো, দয়াময় ঈশ্বর-আল্লাহ! সেই ছোট থেকে হিন্দুদের মন্দির সংরক্ষণে হাত লাগিয়েছিলাম। ভাবিনি, এই দিনটা দেখতে হবে! রাজনীতির জন্যই ধ্বংস হচ্ছে দেশের সম্প্রীতি ও ঐক্য। এরকম চলতে থাকলে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ কীভাবে বাঁচবে কে জানে!'

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)