সুদীপ রায়চৌধুরী: দিলীপ ঘোষ বিয়ে (Dilip Ghosh Marriage) করছেন। তাতে নাকি আপত্তি রয়েছে সংঘের। দলের তরফেও নাকি প্রবল আপত্তি জানানো হয়েছে। বিজেপি এবং দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ সূত্রে এমন বহু খবর শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সে সব জল্পনা উড়িয়ে অন্য ছবি দেখা গেল শুক্রবার সকালে। দিলীপের বিয়ের আগেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এলেন বিজেপি এবং সংঘের নেতারা।
এদিন সকালেই উপহার হাতে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বাড়িতে যায় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, লকেট চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো-সহ অন্যান্যরা। দিলীপের নিউটাউনের বাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ থাকেন তাঁরা। দিলীপের হাতে তুলে দেন ফুল, উপহার। কথা বলেন দিলীপের মায়ের সঙ্গে। শুভেচ্ছা গিয়েছে সংঘের তরফেও। সুনীল দেওধর, সতীশ ধন্দের মতো আরএসএস নেতারাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দিলীপকে। বস্তুত, বিয়ের শুভেচ্ছা পর্বটি সংঘ এবং দলের তরফে সেরে ফেলা হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই।
কেন বিয়ের আগেই শুভেচ্ছা? আসলে দিলীপের বিয়েতে (Dilip Ghosh Marriage) বিজেপি বা সংঘের কোনও নেতাকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। একেবারে ঘনিষ্ঠ মহল এবং দুই পরিবারের কয়েকজন আমন্ত্রিত। দলের বর্তমান নেতৃত্ব তো বটেই বিজেপির অন্দরে যারা টিম দিলীপ হিসাবে পরিচিত তাঁরাও আমন্ত্রিত নন। সমস্যা হল, ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে দিলীপের বিয়েতে প্রবল অনিচ্ছা ছিল সংঘের। সেই অনিচ্ছা উপেক্ষা করে বিয়ে করছেন দিলীপ। এই পরিস্থিতিতে সংঘের বা দলের কোনও নেতা যদি দিলীপের বিয়েতে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে। তাছাড়া দলের অন্দরে যারা দিলীপের ঘনিষ্ঠ তাঁদেরও অভিমানের একটা জায়গা তৈরি হতে পারে। আর এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে, হাজার কোণঠাসা হলেও বিজেপির অন্দরে দিলীপের অনুগামীর সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। সেই সব নেতাকর্মীরা অসন্তুষ্ট হলে চাপ বাড়ত গেরুয়া শিবিরের উপর। সব মিলিয়ে রীতিমতো বিড়ম্বনার পরিস্থিতি। সেই বিড়ম্বনা এড়াতেই সম্ভবত বিনা নিমন্ত্রণেই দিলীপকে শুভেচ্ছা জানানোর ঢল নামালেন বিজেপি নেতারা।
তাছাড়া দিলীপের বিয়েতে সংঘের নেতিবাচক মানসিকতা রয়েছে, এমন তত্ত্বও মানছে সংঘ। আরএসএসের নেতারা বলছেন, কে বিয়ে করছেন বা করছেন, সেটা নিয়ে তাঁদের বিশেষ মাথাব্যাথা নেই। তাঁরা অনেক বেশি চিন্তিত মালদহ-মুর্শিদাবাদের হিন্দুদের সুরক্ষা নিয়ে। সংঘের মুখপাত্র যিষ্ণু বসু কবিগুরুর ব্রাহ্মণ কবিতা উদ্ধৃত করে বলছেন, ‘মধুচক্রে লোষ্ট্রপাতে বিক্ষিপ্ত চঞ্চল/পতঙ্গের মতো?সবে বিস্ময়বিকল’। যিষ্ণুর বক্তব্য, “আমাদের যত না কিছু মনে হচ্ছে, যারা সারা জীবনে কখনও আমদের খবর নেন না, তাঁদের মনে বেশি অশান্তি হচ্ছে যে দিলীপ ঘোষ কেন বিয়ে করছে।”