বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া টাকা ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে চাওয়ায় খুন হতে হয় বাড়িওয়ালিকে। গুরুতর জখম হন বাড়িওয়ালির বৃদ্ধ স্বামী। জামালপুর থানার আবুজহাটি এলাকার একটি বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার হয়েছিল এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ। জখম অবস্থায় সেই ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছিলেন বৃদ্ধার স্বামী। বৃদ্ধ নীলাদ্রি সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরিপেক্ষিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। সেই মামলার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত ভাড়াটিয়া অমিত বাগদি ও তাঁর সহযোগী কুবীর গড়াই ওরফে রবিকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, বিদ্যুতের বিলের ২৪০০ টাকা চাওয়ায় বাড়িওয়ালি ও তাঁর স্বামীর উপর হামলা চালায় অমিত ও কুবীর।
জানা গিয়েছে, নীলাদ্রি সরকারের বাড়ির সামনেই স্থানীয় একটি চটকলে একসঙ্গে কাজ করতেন অমিত বাগদি ও কুবীর গড়াই। কুবীরই অমিত বাগদিকে নীলাদ্রিবাবুর বাড়ি ঠিক করে দেয় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার জন্য। সূত্রের খবর, গত সাত দিন আগে বিদ্যুতের বিল না দিয়ে শুধু বাড়ি ভাড়ার টাকা মিটিয়ে সেই বাড়ি ছেড়ে চলে যান অমিত বাগদি। কিন্তু বিদ্যুতের বিল বাবদ ২৪০০ টাকা দাবি করেন বাড়ির মালিক নীলাদ্রি সরকার। বাড়ির মালিকের বারবার তাগাদায় বিরক্ত হয়ে বাড়িওয়ালাকে খুনের পরিকল্পনা করেন বীরভূমের মল্লারপুরের বাসিন্দা ও ভাড়াটিয়া অমিত বাগদি। পরিকল্পনা মতো বুধবার রাতেই মল্লারপুর থেকে ট্রেনে করে জৌগ্রাম স্টেশনে আসে অমিত। সেখানে কুবীর এর পর জৌগ্রাম স্টেশনে অপেক্ষা করেন অমিত এবং কুবীর।
পুলিশ জানায়, অমিত জানতেন নীলাদ্রিবাবু প্রতিদিন রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়ির বাইরে বেরোতেন। সেই মতো বুধবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ কুবীরকে সঙ্গে নিয়ে নীলাদ্রিবাবুর বাড়িতে পাঁচিল টপকে ঢোকেন অমিত। বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধর বাড়ির বাইরে আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁরা। এর পর নির্ধারিত সময় নীলাদ্রি সরকার বাড়ির বাইরে এলে তাঁকে ধাক্কা মেরে অচৈতন্য করে দেন অভিযুক্তরা। স্বামীর এই অবস্থা দেখে চেঁচামেচি করতে শুরু করেন তাঁর স্ত্রী মীরাদেবী। তখন লাঠি দিয়ে বৃদ্ধার মাথায় বেশ কয়েকবার আঘাত করেন অমিত ও কুবীর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মীরাদেবীর।
বৃহস্পতিবার জখম অবস্থায় নীলাদ্রি সরকারকে উদ্ধার করে প্রথমে জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। এর পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। জানা গিয়েছে, নীলাদ্রি সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে জামালপুর থানার পুলিশ। এর পর মল্লারপুর থেকে অভিযুক্ত অমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জামালপুর থানা এলাকা থেকে কুবীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।