সৌজন্যের নজির! নতুন জীবনে প্রবেশের আগে দিলীপ ঘোষকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা, সঙ্গে গেল ফুলের তোড়া
আনন্দবাজার | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বিয়ে উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফুলের তোড়া পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গে দিলীপের নিউ টাউনের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী পাঠিয়েছেন শুভেচ্ছাবার্তাও। রাজ্য সরকারের ছাপযুক্ত হলুদ রঙের খাম পৌঁছেছে নিউ টাউনে। তাতে সাদার উপর কালো ছাপার হরফে দিলীপের নাম এবং ঠিকানা লেখা। দিলীপের বিয়ে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি তো বটেই, সর্বত্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে মমতার রাজনৈতিক মতবিরোধ প্রবল। তৎসত্ত্বেও রাজনীতিকে পাশে সরিয়ে সৌজন্যের নজির দেখিয়ে নিউ টাউনে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন মমতা। উল্লেখ্য, দিলীপের নিজের দলের অনেকে কিন্তু বিয়ের দু’ঘণ্টা আগে পর্যন্ত তাঁকে ফোন করেননি বা অন্য কোনও ভাবে শুভেচ্ছা জানাননি। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামও রয়েছে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ সেখানেই রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। ঘরোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন যুগলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ গুটি কয়েক মানুষ। সকালে দিলীপের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ অন্য নেতারা। বাড়িতে ছিলেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও।
দিলীপের হবু স্ত্রী রিঙ্কু বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী। দলের সূত্রেই তাঁদের আলাপ। বিয়ের খবর জানাজানি হতেই শুভেচ্ছার ঢল নেমেছে। সুকান্তের সঙ্গে সকালে দিলীপের বাড়িতে গিয়েছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিতাভ চক্রবর্তী, সতীশ ঢোন্ডের মতো নেতারা। দিলীপের জন্য সুকান্ত নিয়ে গিয়েছিলেন ফুলের তোড়া, মিষ্টির বাক্স আর ধুতি-পাঞ্জাবি। বিজেপির অন্য নেতারাও ফুল, মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন। কারও কারও হাতে তার পাশাপাশি অন্য উপহারও ছিল। দিলীপ প্রত্যেককে প্রতি-উপহার দিয়েছেন। লকেটকে দিয়েছেন শাড়ি। বাকিদের কাউকে দিয়েছেন পাজামা-পাঞ্জাবির সেট, কাউকে পাঞ্জাবি বানানোর কাপড়। কাউকে দিয়েছেন ধুতি। তাঁরা বিকেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকবেন না।
দিলীপ-রিঙ্কুর মধুচন্দ্রিমার গন্তব্য কোথায়? সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে নির্দিষ্ট করে কোনও জায়গা বলেননি রিঙ্কু। তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, দু’জনে মিলে নির্জন কোনও পাহাড়ি এলাকায় যেতে চান। রিঙ্কুর কথায়, ‘‘কোনও আইসোলেটেড জায়গায় যেতে চাই। কারণ, উনি (দিলীপ) যেখানেই যান, সেখানেই ভিড় জমে যায়।’’
গত বছর ষাট পেরিয়েছেন দিলীপ। ঘটনাচক্রে, শনিবারই তাঁর জন্মদিন। তিনি নিজে আড়ম্বরে বিশ্বাসী নন। প্রতি দিনের মতো শনিবারও নিউ টাউনে প্রাতর্ভ্রমণে বেরোবেন তিনি। সেখানে অনুগামীরা তাঁর জন্মদিন পালন করবেন বলে খবর। নববধূ সেখানে থাকবেন না। রীতি-আচার মেনে বিয়ের পরের দিন তিনি বাড়িতেই থাকবেন। শনিবার দমদমে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি আছে দিলীপের। সেখানে তিনি যোগ দেবেন। পরে খড়্গপুরেও যাবেন। বিয়ের জন্য দিলীপের রাজনীতির কর্মসূচিতে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। সুকান্ত নিউ টাউনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জানান, দিলীপের বিয়েতে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিয়ের মধ্যে তো অস্বাভাবিক কিছু নেই। রাজনীতিতে যাঁরা থাকেন, সামাজিক জীবনে যাঁরা থাকেন, তাঁদের সমাজের কাজ এবং রাজনীতির কাজ করতে গিয়ে অনেক দেরি হয়ে যায়। দিলীপদাকে আগামী জীবনের জন্য শুভেচ্ছা।’’