• অবরোধ সত্ত্বেও মহিলা কামরার সংখ্যা না কমানোর পক্ষে রেল
    আনন্দবাজার | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • প্রয়োজনে মাতৃভূমি লোকালে মহিলা যাত্রীদের ভিড় খতিয়ে দেখে ওই ট্রেনের কয়েকটি কামরা সাধারণ যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট করা যায় কিনা, তা ভেবে দেখবে রেল। কিন্তু, শিয়ালদহ ডিভিশনে ১২ কোচের লোকাল ট্রেনে মহিলা কামরার সংখ্যা দুই থেকে বাড়িয়ে তিন করার সিদ্ধান্ত থেকে কোনও ভাবেই সরে আসা হবে না। লোকাল ট্রেনে মহিলা যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম।

    উল্লেখ্য, লোকাল ট্রেনে মহিলা কামরার সংখ্যা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবার শিয়ালদহ-লক্ষ্মীকান্তপুর শাখার একাধিক স্টেশনে দফায় দফায় অবরোধ হয়েছিল। একই কারণে বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার শাখার উত্তর রাধানগর হল্ট এবং মগরাহাট স্টেশনে বিক্ষোভ, অবরোধ হয়। এ দিন সকাল ৬টা ২৫ মিনিট থেকে সাড়ে ন’টা পর্যন্ত টানা অবরোধ চলে উত্তর রাধানগর হল্ট স্টেশনে। পরে হোটর স্টেশনের কাছে লেভেল ক্রসিংয়ে ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলায় ৮টা ৪০ মিনিট থেকে ৯টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। একই ঘটনা ঘটে ধামুয়া স্টেশনেও। অবরোধের জেরে আপ ও ডাউন মিলিয়ে ১৫টি ট্রেন বাতিল করতে হয়।

    সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের পরে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, ওই শাখায় বহু দিন ধরেই ১২ কোচের ট্রেন চলছে। তাতে ভিড়ও হয় যথেষ্ট। এই অবস্থায় কামরার সংখ্যা কমে যাওয়ায় নিত্যযাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।

    এ দিন শিয়ালদহের ডিআরএম জানান, গত কয়েক বছরে মহিলা যাত্রীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। ভিড়ের কারণে তাঁদের ট্রেনে ওঠানামা করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছিল। পাশাপাশি, ট্রেন ছাড়তেও দেরি হচ্ছিল। সব দিক বিবেচনা করেই মহিলা যাত্রীদের জন্য পরিসর কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। কোথাও ভিড়ের কারণে সাধারণ যাত্রীদের অসুবিধা হলে রেল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বাড়তি ট্রেন চালানোর কথা বিবেচনা করবে।

    একই সঙ্গে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শিয়ালদহ উত্তর এবং মেন শাখায় ছ’জোড়া মাতৃভূমি লোকাল চলে। তাতে ভিড় কম হলে প্রয়োজনে সেখানে সাধারণ যাত্রীদের জন্য কয়েকটি কামরা নির্দিষ্ট করা যায় কিনা, তা ভেবে দেখা হবে। তবে, অফিসের ব্যস্ত সময়ে ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই মহিলা যাত্রীদের জন্য ওই ট্রেন চালানো হয়। তাই সেই চাহিদার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।

    রেলকর্তাদের একাংশের অভিযোগ, নিত্যযাত্রীদের একটি অংশ ট্রেনের নির্দিষ্ট কামরায় সফর করে অভ্যস্ত। নির্দিষ্ট ওই কামরা ছাড়া তাঁরা অন্য কামরায় উঠতে চান না।

    তাঁদেরই একাংশ বিক্ষোভে মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীদের অনড় মনোভাব বহু ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করছে বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা। যদিও নিত্যযাত্রীদের একাংশের পাল্টা যুক্তি, একাধিক লোকাল ট্রেনে মাঝের কামরা তুলনামূলক ভাবে অনেকটা ফাঁকা থাকলেও গন্তব্য স্টেশনে দ্রুত ওঠা-নামা করার সুবিধার জন্য অনেকেই দু’প্রান্তের কামরায় সফর করাই ঠিক বলে মনে করেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)