এসএসসি: উত্তরপত্রের কার্বন কপি হাতে পাবেন পরীক্ষার্থীরা? নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বিবিধ বদলের প্রস্তাব যাচ্ছে শিক্ষা দফতরে
আনন্দবাজার | ১৮ এপ্রিল ২০২৫
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় একাধিক বদল আনতে পারে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। আগামী ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। তার আগে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনেক বদলের ভাবনা রয়েছে। সেগুলি প্রস্তাব আকারে স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠাতে চলেছে এসএসসি। সরকারের অনুমতি মিললে নিয়োগবিধি বদলে ফেলা হবে। স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটের কার্বন কপি হাতে পেতে পারেন। পরীক্ষার পর তা বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারবেন। এই প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
এসএসসি সূত্রে খবর, শুধু ওএমআর শিটের কার্বন কপি নয়, পরীক্ষা পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ফলপ্রকাশের আগেই নির্দিষ্ট উত্তরপত্র প্রকাশ করে দেওয়ার প্রস্তাবও করা হয়েছে। তা হলে কে কত নম্বর পাবেন, ওই উত্তরপত্র দেখেই তার ধারণা করে নিতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার পর কাউন্সেলিং পর্বেও কিছু বদল আনা হতে পারে। তবে সবই আপাতত ভাবনা এবং আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসের মধ্যেই নতুন নিয়োগবিধি প্রস্তুত করে স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দেবে কমিশন। সরকার সেই প্রস্তাবে সায় দিলে সেই বিধি মেনে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হবে।
জানা গিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগী হয়েছিল কমিশন। একাধিক পরিবর্তন করে নতুন নিয়োগবিধির একটি খসড়া ওই সময়েই প্রস্তুত করা হয়েছিল। তা শিক্ষা দফতরে পাঠানোও হয়। ২০২৩ সাল পর্যন্ত তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তার পর আর কথা এগোয়নি। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর পুরনো খসড়া নিয়ে আবার তৎপর হয়ে উঠেছে এসএসসি। পুরনো খসড়াটিতে আরও কিছু পরিবর্তন করে শিক্ষা দফতরে আবার পাঠানো হবে। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন আঞ্চলিক প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন এসএসসির চেয়ারম্যান। একাধিক বৈঠক হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল চাকরি বাতিলের মামলায় রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেল বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৩৫ জনের। আদালত জানিয়েছে, নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আর্জিতে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ জানায়, চাকরি গেলেও আপাতত নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে যেতে পারবেন। শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অবশ্য এই নির্দেশ কার্যকর হবে না। ৩১ মে-র মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। আদালতে তা হলফনামা আকারে জানাবে রাজ্য সরকার। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়কে ‘বড় স্বস্তি’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। জানিয়েছেন, আদালতের সময়সীমা মেনেই যা করার করা হবে।