• মিলবে উত্তরপত্রের কার্বন কপি, শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় একাধিক বদলের সম্ভাবনা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় একাধিক বদল আসতে চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। এবার থেকে পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটের কার্বন কপি হাতে পেতে পারেন। শুধু তাই-ই নয়, তাঁরা সেই কার্বন কপি সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন। একই সঙ্গে ফলপ্রকাশের আগেই ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট উত্তরপত্র প্রকাশ করে দেওয়া নিয়েও কথাবার্তা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার পর কাউন্সেলিং পর্বেও কিছু বদল আনা হতে পারে। আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে তা প্রস্তাব আকারে স্কুল শিক্ষা দপ্তরে পাঠাবে এসএসসি। সরকারের অনুমতি মিললে নিয়োগবিধি বদলে ফেলা হবে।

    স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে পরীক্ষা নেওয়ার পরপরই ‘আনসার কি’ প্রকাশ করা হবে। সেক্ষেত্রে কে কত নম্বর পাবেন, ওই উত্তরপত্র দেখেই তার ধারণা করে নিতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও চালু হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে যে সব অভিযোগ আছে, তা খুব সহজেই জানাতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ‘আনসার কি’ চ্যালেঞ্জ করার বিষয়টি বহু বছর ধরেই চালু রয়েছে। আগামী ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে এপ্রিল মাসের মধ্যেই নতুন নিয়োগবিধি প্রস্তুত করে স্কুল শিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়ে দেবে কমিশন। সরকারের তরফে সবুজ সংকেত দেওয়া হলেই নতুন বিধি মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

    বেশ কয়েক বছর আগে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগী হয়েছিল কমিশন। নতুন নিয়োগ বিধির একটি খসড়াও শিক্ষা দপ্তরে পাঠানো হয়। কিন্তু তার পর আর কথা এগোয়নি। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর পুরনো খসড়া নিয়ে আবার তৎপর হয়ে উঠেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। দ্রুত নতুন নিয়োগ বিধি চূড়ান্ত করতে চলেছে তারা। সূত্রের খবর, বিভিন্ন আঞ্চলিক প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন এসএসসির চেয়ারম্যান। একাধিক বৈঠক হয়েছে। পুরনো খসড়াটিতেই বেশ কিছু পরিবর্তন করে শিক্ষা দপ্তরে আবার পাঠানো হবে। দ্রুত এই প্রক্রিয়া সেরে ফেলার চেষ্টা করছে এসএসসি। কারণ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেছে দেশের শীর্ষ আদালত।

    গত ৩ এপ্রিল ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। এরপর আদালতের দ্বারস্থ হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের আর্জিতে সাড়া দিয়ে রায়ে কিছু সংশোধন এনেছে সুপ্রিম কোর্ট। যাঁরা ‘দাগি’ নন, তাঁদের আপাতত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আপাতত নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে যেতে পারবেন। শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অবশ্য এই নির্দেশ কার্যকর হবে না। ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলতে হবে। আদালতের এই নির্দেশের কারণেই তড়িঘড়ি নতুন নিয়োগবিধি তৈরি করতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)