• দৃষ্টিহীনদের নিয়ে রাজ্যস্তরে ফুটবল টুর্নামেন্ট শিলিগুড়িতে
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বাঙালির মনে ফুটবল নিয়ে উন্মাদনার অন্ত নেই। সেই ঐতিহ্য উন্মদনায় শামিল হতে চলেছে দৃষ্টিহীনরাও। রাজ্যে এই প্রথম দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে তিনদিনের স্কুল টুর্নামেন্ট হতে চলেছে শিলিগুড়িতে। তার সঙ্গেই হবে প্রশিক্ষণ শিবির। পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগের খেলা হবে। রাজ্য থেকে ছেলেদের আটটি ও মেয়েদের চারটি দৃষ্টিহীন স্কুল অংশগ্রহণ করবে। এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফর দি ব্লাইন্ড অব বেঙ্গল। আর এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে চলেছে নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুল। এছাড়াও অংশ নেবে রাজ্যের নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমি,  পশ্চিম মেদিনীপুরের নিমবার্ক মঠের ছাত্ররা, পুরুলিয়া মানভূম দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়, ভীমবার দৃষ্টিহীন স্কুল দার্জিলিং এবং নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুল সহ অন‍্যান‍্য বিদ‍্যালয়। শুধু অনুভূতি শক্তি দিয়ে এরা গোলপোস্ট থেকে মাঝমাঠ দাপিয়ে বেড়াবে। সেই প্রতিযোগিতায় জয় ছিনিয়ে আনতে মরিয়া নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা। 

    আগামী ২৭ থেকে ২৯ মে শিলিগুড়ি ভীমবার ব্লাইন্ড স্কুল ও ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফর দি ব্লাইন্ড অফ বেঙ্গল যৌথভাবে এই দৃষ্টিহীন টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। মহিলা ও পুরুষ বিভাগে প্রতি দলে পাঁচজন করে খেলবে। ২০মিটার চওড়া ও ৪০মিটার লম্বা মাঠে এই খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ মিনিট করে খেলা হবে। ৫ মিনিট বিরতি থাকবে। শুক্রবার নবদ্বীপ স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে দেখা গেল নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন দৃষ্টিহীন জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলাররা। এই টুর্নামেন্টে পাঁচজন করে খেলোয়াড় খেলতে পারবে। একজন গোলরক্ষক দু’জন স্টপার আর দু’জন স্ট্রাইকার। এই পাঁচজনের মধ্যে গোলকিপার সাধারণ খেলোয়াড়কে নেওয়া যাবে। অর্থাৎ, যার দৃষ্টিশক্তি আছে অর্থাৎ দেখতে পান। তিনি গোলপোস্ট রক্ষা করবেন। আর বাকি চারজন দৃষ্টিহীনের মধ্যে দু’জন প্রাক্তন খেলোয়াড় এবং দু’জন বর্তমান খেলোয়াড় মোট পাঁচজন খেলবে। প্রতি দলে খেলা পরিচালনায় দু’জন গাইড থাকবে। আর এক গাইড বিপক্ষে দলের বার পোস্টের পিছনে নিজের দলের হয়ে স্ট্রাইকারদের নির্দেশ দেবে। ধাক্কাধাক্কি যাতে না লাগে সেজন্য চার সেকেন্ড পর পর মুখে ‘ওয়াই ওয়াই’ আওয়াজ করতে হবে। মাঠের বাইরে যাতে বেরিয়ে না যায়, নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে খেলোয়াড়রা খেলতে পারে, সেই জন্য মাঠের চারিদিকে বিশেষ ব্যারিকেড দিয়ে দেওয়া হবে। কোচ বিল্টু গড়াই, কোচ মারিফা খাতুন বলেন, এখন আমাদের ছেলেমেয়েদের অনুশীলন করাচ্ছি। নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের শিক্ষক তথা ফুটবল কোচ গোপাল কংসবণিক বলেন, এই ক’দিনের অনুশীলনে ওরা যথেষ্ট ভালো খেলছে। নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই টুর্নামেন্ট থেকেই সিলেকশন হবে জোনালে। সেখানে ভালো করলে জাতীয়স্তরে সুযোগ পাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)