বাঁকুড়ায় দলীয় কর্মীদের গ্রাম পাহারা দেওয়ার ডাক জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের
বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: মুর্শিদাবাদে হিংসার জেরে এবার বাঁকুড়া জেলায় কর্মীদের উদ্দেশে গ্রাম পাহারা দেওয়ার ডাক দিল তৃণমূল। শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব বিধানসভাভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে ওই নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইন্দপুরের হাটগ্রামে শাসকদলের ছাতনা বিধানসভার কর্মী সম্মেলন হয়। সেখানে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, বিরোধীদের একাংশ নানা জায়গায় অশান্তির ছক কষছে। সেজন্য বহিরাগতদের এলাকায় ঢোকানো হচ্ছে। বিধানসভা ভোটের আগে এধরনের প্রবণতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। তাই কর্মীদের গ্রাম আগলে রাখতে হবে। প্রয়োজনে রাত পাহারা দিতে হবে। কোনওভাবেই এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।
বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, বাঁকুড়ার মানুষ শান্তিপ্রিয়। ফলে এখানে শান্তির পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। তৃণমূল পারলে মালদহ, মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে কর্মীদের গ্রাম পাহারা দেওয়ার ডাক দিক। সেখানকার অত্যাচারিত মানুষকে রক্ষা করতে ওরা ব্যর্থ হয়েছে। সেই দায় তৃণমূলকে নিতে হবে।
বাঁকুড়া জঙ্গলমহলের জেলা হওয়ায় পুলিস সারাবছরই সতর্ক থাকে। তবে মুর্শিদাবাদের ঘটনার পর জেলা পুলিসের কর্তারা গোয়েন্দা বিভাগকে আরও সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নজরদারি শুরু হয়েছে। এরই মাঝে তৃণমূল বাঁকুড়ার বিভিন্ন বিধানসভায় কর্মী সম্মেলন করছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শিক্ষকদের চাকরি হারানো ও মুর্শিদাবাদের গণ্ডগোলের পর পরিস্থিতি আঁচ করেই তৃণমূল নেতৃত্ব ব্লকে ব্লকে এধরনের কর্মসূচি নিচ্ছে। বিশেষ করে চাকরিহারাদের সমর্থনে বাঁকুড়া শহরে তৃণমূলের মিছিলে বিপুল জনসমাগম শাসকদলকে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে। ওই মিছিলে জেলার নানা প্রান্ত থেকে লোকজন এসেছিলেন।
শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় জনসমর্থন কতটা অটুট রয়েছে-তা বুঝতে তৃণমূল ময়দানে নেমেছে। গ্রাম পাহারা দেওয়ার বার্তা আদতে বিরোধীদের সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়াসকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। কারণ দিনে কাজ সেরে সন্ধ্যায় বিরোধী দলের কর্মীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে সংগঠন গড়ে তোলার কাজ করছে। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে চায়ের ঠেকে, মানুষের বাড়ি গিয়ে প্রচারের চেষ্টা করছে। তৃণমূল পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল নেওয়ায় তারা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যাবে।