সংবাদদাতা, মানকর: পরিবহণ দপ্তরের স্বীকৃতি না থাকলেও ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পানাগড়, বুদবুদ এবং সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে দাপাচ্ছে ইঞ্জিন ভ্যান। যাত্রী থেকে পণ্য সবই পরিবহণ করছে ভ্যানগুলি। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, অনেক সময় বেপরোয়া গতিতে চলে এই ভ্যান। দুর্ঘটনাও ঘটে। কিন্তু পরিবহণ দপ্তর স্বীকৃত না হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। যদিও কাঁকসা থানার ট্রাফিক বিভাগ জানাচ্ছে, ভ্যানগুলির উপর কড়া নজরদারি চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোটর সাইকেলের বাতিল ইঞ্জিন বা জল তোলার শ্যালো মেশিন লাগিয়ে তিন চাকার এই ভ্যান তৈরি করা হয়। পরিবহণ দপ্তরের আইনের আওতায় এইসব ভ্যান পড়ে না। তাই দুর্ঘটনা ঘটলে মেলে না কোনও ক্ষতিপূরণ। পাশাপাশি আইন ভাঙলে চালক বা মালিকদের আর্থিক জরিমানা বা লাইসেন্স জমা নেওয়ারও ব্যবস্থা নেই। ফলে ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠছে ভ্যান চালকদের একাংশ।
প্রথমদিকে ইঞ্জিন ভ্যানে হ্যান্ডল ব্যবহার করা হতো। কিন্তু ইদানীং নতুন মডেলের নানা রকম ইঞ্জিন ভ্যান দেখা যাচ্ছে। ভ্যানে সাধারণ হ্যান্ডলের বদলে স্টিয়ারিং লাগানো হচ্ছে। ভ্যানের মাপেও আগের থেকে অনেকটাই বড় করা হচ্ছে। যাতে বেশি মাল নিয়ে যাওয়া যায়। জানা গিয়েছে, একটি মোটর ভ্যান তৈরি করতে কমবেশি প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়। পানাগড়ের বাসিন্দা বাপি সেন বলেন, ইঞ্জিন ভ্যান বেআইনি। পরিবহণ দপ্তরে এই ভ্যানের স্বীকৃতি নেই। ভ্যানের কোনও রেজিস্ট্রেশন হয় না। ইঞ্জিন ভ্যান চালানোর জন্য সরকারকে করও দিতে হয় না। তাই এই গাড়িগুলিকে রুখতে হলে পুলিসকে কড়া হতে হবে। তিনি জানান, জাতীয় বা রাজ্য সড়কে এই ভ্যান চালানোর নিয়ম নেই। কিন্তু তারপরেও ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক বা পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়কে ভ্যান চলছে। অনেক সময় প্রচুর মালপত্র চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক সময় বীরভূম থেকে রাজ্য সড়ক ধরে মোটর ভ্যান কাঁকসা থানা এলাকাতে চলে আসছে।
স্থানীয় শিক্ষক পার্থসারথি ঘোষ বলেন, প্রথমে পায়ে টানা ভ্যানে ইঞ্জিন লাগিয়ে ব্যবহার শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন ইঞ্জিন ভ্যানে এলাকা ছেয়ে গিয়েছে। যে গতিতে ভ্যানগুলি চলে তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি দূষণও ছড়াচ্ছে। আগের থেকে আকারে ভ্যানগুলি চওড়া হওয়ায় মালপত্র অনেক বেশি নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন ছোট ট্রাক মালিকরা। ভাড়া পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা। জাতীয় সড়কে মোটর ভ্যান চলায় দ্রুতগতির গাড়ি চলাচলে সমস্যা হয় বলেও জানান এক ট্রাক চালক। তিনি জানান, জাতীয় সড়কে গাড়ি নির্দিষ্ট গতিতে চলে। মোটর ভ্যানের জন্য রাস্তায় যানজট হয় এবং বড় গাড়ির গতি কমে যায়। দুর্ঘটনার সম্ভবনা থাকে। কাঁকসা ট্রাফিক সূত্রে জানা যায়, আইনত নিষিদ্ধ ওই ভ্যান। নিয়মিত অভিযান করা হয়। কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে চলছে ইঞ্জিন ভ্যান।-নিজস্ব চিত্র