• জমিতে পাঁচিল দিতে তৃণমূল নেতাকে ২ লক্ষ! অভিযোগ ঘিরে শোরগোল
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: নিজের জমিতে সীমানা পাঁচিল দিতে গেলেও দিতে হবে দু’ লক্ষ টাকা! এই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় আউশগ্রাম। পঞ্চায়েত থেকে সামান্য পাঁচিল দেওয়ার অনুমতির জন্য কেন টাকা চাইবে তৃণমূল নেতা? এই প্রশ্ন তুলছেন আউশগ্রামের মানুষ। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যুবক। আউশগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হাসিবা শেখ বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি। বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার বলেন, বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। ঘটনাস্থল আউশগ্রামের বননবগ্রাম। ওই গ্রামে সোহম চট্টোপাধ্যায় নামে এক যুবকের পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। তার চারপাশে সোহম সীমান পাঁচিল দিতে চাইছেন। পঞ্চায়েতের অনুমতির জন্য ওই অঞ্চলের এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা নাকি সোহমবাবুর কাছে দু’ লক্ষ টাকা দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত এক লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা দিতে রাজিও হন কলকাতায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী সোহম। ওই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার এক সঙ্গীকে দু’টি ইউপিআইয়ে ৯৫ হাজার টাকা দিয়েছেন আর ১ লক্ষ টাকা নগদে দিয়েছেন। এরপর নাকি ওই নেতা পঞ্চায়েতের অনুমতি ছাড়াই পাঁচিল তুলতে বলেন। সোহম নেতার কথা শুনে পাঁচিল তুলতে যান। অভিযোগ, এরপরেই ওই নেতা তাঁর শাগরেদদের দিয়ে সোহমকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান পার্টি অফিসে। তারপর আরও টাকা চাওয়া হয়। সে টাকা না দিতে পারায় পাঁচিল ভেঙে দেওয়া হয়। 

    সোহম চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমার কাছে বার বার টাকা চাওয়া হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে। নিজের জমিতে নির্মাণ করতে পারব না! ওই নেতার দলবল এসে শাসিয়ে যাচ্ছে। আমি প্রশাসনের সব স্তরেই অভিযোগ জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে সব জানিয়েছি। 

    অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা। ওই জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ বিঘা। শরিকি জায়গা। তার মধ্যে স্কুল, খেলার মাঠও রয়েছে। প্রতিবছর সরস্বতী পুজোর সময়ে মাঠে মেলা বসে। কিন্তু ওই যুবক প্রথমে যে অংশের মালিক বলে আমাদের জানিয়েছিলেন সেই অংশ না ঘিরে অন্য অংশে পাঁচিল দিচ্ছিলেন। তাতে ভবিষ্যতে মেলা বসতে সমস্যা হতো। তাই স্থানীয়রাই কাজ আটকে দিয়েছেন। এখানে আমার স্বার্থ কিছু নেই। ওই প্রভাবশালী নেতা কার্যত হুমকির সুরেই বলেন, আমি যদি নেতা না হতাম তাহলে ওসব ছেলেকে দেখিয়ে দিতাম। ওই নেতার এহেন মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই বলছেন, ওই নেতা নাকি দোর্দণ্ডপ্রতাপ। 

    এদিকে আউশগ্রাম-১ বিডিও কামরুল ইসলাম বলেন, আমি পঞ্চায়েতে খোঁজ নিয়েছিলাম। তারপরে ওই যুবককে প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে পঞ্চায়েতে আবার যেতে বলেছিলাম। তারপর কী হয়েছে জানি না। 
  • Link to this news (বর্তমান)