• সঙ্ঘ-বিজেপির গুরুদায়িত্ব সামলে এবার ‘স্বামী’র ভূমিকায় দিলীপ ঘোষ, শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও ঝাড়গ্ৰাম: নয়া ইনিংস শুরু করলেন দিলীপ ঘোষ। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কিশোর অবস্থায় ঘর ছেড়েছিলেন। তারপর কাটিয়েছেন ৪০ বছরের প্রচারক জীবন। সঙ্ঘের নির্দেশে ১০ বছর বিজেপি’তে সময় দিয়েছেন। ষাটটি বসন্ত কাটিয়ে গুড ফ্রাই ডে’তে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন। আক্ষরিক অর্থেই জীবনের একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। মা পুষ্পলতা ঘোষের উপস্থিতিতে এদিন নিউটাউনের বাড়িতে ঘরোয়াভাবে বিয়ে সারলেন আদরের ‘নাড়ু’। সন্ধ্যায় দলীয় সহকর্মী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে মালা বদলের পর আক্ষরিক অর্থেই ‘স্বামী’ অবতারে অবর্তীর্ণ হলেন ‘গোরুর দুধ থেকে সোনা’ বের করা থিওরির আবিষ্কারক। রাত আটটা নাগাদ সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন নবদম্পতী। ‘স্বামী’ হওয়া দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, রাজনীতিক হিসেবে আগের মতোই তিনি কাজ করবেন। পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বও পালন করবেন। পাত্রী রিঙ্কুর কথায়, গুরু দায়িত্ব। চেষ্টা করব, তা পালন করার।

    এদিন সকাল থেকেই সাজ সাজ রব ছিল নিউটাউনে দিলীপের বাড়িতে। সুকান্ত মজুমদার, সুনীল বনসাল, মঙ্গল পাণ্ডে, শমীক ভট্টাচার্য সহ তাবড় বিজেপি নেতারা উপহার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। দিলীপবাবু অবশ্য তাঁর বিয়েতে কাউকেই আনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণ করেননি। সর্বভারতীয় বিজেপির প্রাক্তন এই সহ-সভাপতির বিয়ে আটকাতে সঙ্ঘ থেকে বিজেপি, মরিয়া চেষ্টা করেছিল। কার্যত অভিমানেই বিয়ের জাঁকজমক থেকে পিছিয়ে আসেন গোপীবল্লভপুরের প্রাক্তন এই প্রচারক। এদিন আরও চমক ছিল। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেচ্ছা বার্তার সঙ্গে ফুল, মিষ্টি পাঠিয়েছেন ‘রাজনৈতিক শত্রু’ দিলীপ ঘোষকে। বঙ্গ বিজেপির এই দাবাং নেতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বহু সাধারণ মানুষ। রাতে অতিঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে নিয়ে বাঙালি মেনু সহযোগে ভোজ সারেন নব দম্পতি।       

    অন্যদিকে, গোপীবল্লভপুর দুই ব্লকের প্রত্যন্ত গ্ৰাম কুলিয়ানা। এখানেই বিজেপির দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষের বাড়ি। তাঁর বিয়ের খবরে গ্ৰামে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। মেজ ছেলের বিয়ের খবর মা পুষ্পলতা একমাস আগেই জানিয়েছিলেন। সেই খবর সত্যি হওয়াই খুশি ছোট ভাই হীরক ঘোষ। মা পুষ্পলতাদেবী মেজ ছেলে দিলীপের কলকাতার বাড়িতে দশ মাস ধরে রয়েছেন। সেখান থেকেই ফোনে ছোট ছেলেকে জানিয়েছিলেন, তোর মেজদার বিয়ে দেব। আর কতদিন একা একা থাকবে। সেই কথা যে এত তাড়াতাড়ি ফলবে, ভাবতে পারেননি হীরক ঘোষ। গ্ৰামের বাসিন্দারাও শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন। সকাল থেকে ফোন ধরতে ধরতে বাড়ির সদস্যরা নাজেহাল। খুড়তুতো ভাই সুকেশ ঘোষ বলেন, দাদার বিয়ের কথা আগে থেকেই জানতাম। বাড়ির লোকেরা সবাই চাইত, মেজদা বিয়ে করুক। অবশেষে সেই আশা এতদিনে পূরণ হল।  
  • Link to this news (বর্তমান)