• স্ট্রেস কমাতে পুলিশের জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম
    এই সময় | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • স্ট্রেস, ডিপ্রেশন থেকে পুলিশকর্মীদের রেহাই দিতে ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’–এর আয়োজন করল কলকাতা পুলিশ। কাজের জন্য লাগাতার শারীরিক ও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ফোর্সের অফিসার ও কর্মীদের। অনেক পুলিশকর্মীর মধ্যে ডিপ্রেশনও দেখা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ সব বিষয় মাথায় রেখেই এই প্রোগ্রামের আয়োজন করেছিল পুলিশ। সেখানেই পুলিশকর্মীদের দেওয়া হয় মন্ত্র — অতিরিক্ত চাপ কমাতে নিয়ম মেনে রোজ করতে হবে যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন।

    কলকাতা পুলিশের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে এই অনুষ্ঠানে প্রায় আড়াইশো পুলিশকর্মী ও অফিসার উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন কম্যান্ডো, র‍্যাউ, উইনার্স টিমের কর্মীরা। ছিলেন এসিপি, জয়েন্ট কমিশনার পদের অফিসার–সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকরাও।

    পুলিশ আধিকারিকদের ক্ষেত্রে স্ট্রেস কেন বেশি? দীর্ঘ সময় ধরে ডিউটি করা, পরিবারের জন্য কম সময় দেওয়া, চ্যালেঞ্জ নিয়ে কর্তব্য পালন করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না–পাওয়া — এ সব মিলিয়েই চাপ বাড়ছে দিনের পর দিন। বাড়ছে উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, পোস্ট–ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিজ়অর্ডার–সহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যা। বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যাও। এ সবের কারণে কর্মদক্ষতা কমে যায়। পারিবারিক ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হয়।

    এই অবস্থায় পুলিশকর্মীদের বলা হয় অতিরিক্ত চিন্তা বন্ধ করতে। ডেইলি রুটিনে মেডিটেশন, যোগ ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি — বলা হয় সে কথাও। পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয় প্রোগ্রামে। প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে ছিলেন এসিপি হেডকোয়ার্টার্স অলোক স্যানাল। তিনি বলেন, ‘এই সব পরামর্শ পুলিশকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অনেকটাই উন্নতি করবে। আমরা জেনেছি, ডিউটি থেকে ফেরার পরে ঘরের কাজ করা প্রয়োজন। অফিস বা ডিউটি নিয়ে অহেতুক চিন্তা বাড়িতে বয়ে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।’

    কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ,অপরাধ প্রতিরোধে, নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেদের জীবনকে পুলিশকর্মীরা ঝঁুকিপূর্ণ করে তোলেন। বিভিন্ন চাপ, বিষণ্ণতার মুখোমুখি হন। ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগাম’–এ পুলিশের মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। যা কর্মীদের মনোবল ও মানসিক–অাধ্যাত্মিক একাগ্রতা বৃদ্ধি করবে। ফলে স্ট্রেস–উদ্বেগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হবে।’

    ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগাম’–এর বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। যেমন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় কাজ করা, সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করা, রোজকার জীবনে সুস্থ ও আনন্দের সঙ্গে কাজ করা — এই বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হয়।

    যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ পাপিয়া ভরদ্বাজ বলেন, ‘পুলিশের চাকরিতে সময় বলে কিছু নেই। তাই যখনই সময় পাবেন ডিউটির পরে হাঁটাহাঁটি–যোগব্যায়াম করা দরকার। প্রাণায়ম, ব্রিদিং এক্সারসাইজ়, কপালভাতির মতো ব্যায়াম করতে পারেন। এতে মন পজ়িটিভ থাকবে।’ আর্ট অফ লিভিং–এর ফ্যাকাল্টি ভাস্বতী লাহিড়ী বলেন, ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ়ে স্ট্রেস লেভেল অনেকটা কমে যায়। পুলিশকর্মীদের এটা অবশ্যই করা উচিত।’

  • Link to this news (এই সময়)