না জানিয়ে কলকাতা থেকে ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার! তেলেঙ্গানার পুলিশকে নোটিস লালবাজারের
প্রতিদিন | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
অর্ণব আইচ: কলকাতা পুলিশকে না জানিয়েই তল্লাশি চালিয়ে এক ব্যবসায়ীকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে তেলেঙ্গানা পুলিশ। আর তাতেই শেক্সপিয়র সরণি থানায় ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর কয়েকজন বন্ধু। এবার এই মামলার তদন্তেই তেলেঙ্গানা পুলিশকে নোটিস পাঠাল কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার শেক্সপিয়র সরণি থানার পক্ষে তেলেঙ্গানার গোলকোন্ডা থানাকে এই নোটিস পাঠানো হয়। থানার যে আধিকারিকরা এই গ্রেপ্তারির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের তলবও করা হয়েছে বলে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছিল দক্ষিণ কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের একটি হোটেলে। হাওড়ার ব্যবসায়ী যশবিন্দর সিং কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ওই হোটেলের একটি ঘর ভাড়া নেন। তার কিছুক্ষণ পরই কয়েকজন ব্যক্তি এসে নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেন। বন্ধুদের অভিযোগ অনুযায়ী, প্রথমে কোন রাজ্য বা শহরের পুলিশ, তা জানানো হয়নি তাঁদের। এরপর নিজেদের তেলেঙ্গানা পুলিশ বলে দাবি করে ওই ব্যক্তিরা জোর করে ব্যবসায়ীকে হোটেলের বাইরে রাস্তায় বের করে নিয়ে আসেন। এরপর তাঁকে একটি গাড়িতে তুলে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরে। সেখান থেকে হায়দরাবাদের বিমানে করে তাঁকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু এই গ্রেপ্তারির ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ তথা শেক্সপিয়র সরণি থানাকে কিছু জানানো হয়নি। এমনকী, কলকাতার কোনও আদালতেও তোলা হয়নি ওই ব্যক্তিকে। পুলিশ পালটা অপহরণের অভিযোগের তদন্তে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিষয়টি জানতে পারে। এই ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে তেলেঙ্গানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। শুধু বৃহস্পতিবার বেশি রাতে কলকাতা পুলিশকে একটি মেসেজ পাঠিয়ে তেলেঙ্গানা পুলিশ জানায়, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে একজনকে ধরা হয়েছে।” কিন্তু তার থেকে বেশি কিছু জানানো হয়নি।
পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে যে, তেলেঙ্গানার গোলকোন্ডা থানার পুলিশ যশবিন্দরকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। অথচ তাঁর পরিবার ও পরিজনদেরও কিছু জানানো হয়নি। ফলে অভিযোগের ভিত্তিতে যে অপহরণের মামলা শুরু হয়েছে, তাতে অভিযোগের আঙুল উঠেছে গোলকোন্ডা থানার আধিকারিকদের উপর। সূত্রের খবর, এদিনই শেক্সপিয়র সরণি থানার পক্ষ থেকে গোলকোন্ডা থানায় নোটিস পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, থানার কোন কোন আধিকারিকরা কলকাতায় এসে ওই ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন। কেন তাঁরা কলকাতা পুলিশকে কিছু জানাননি বা ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলেননি, তা-ও জানতে চেয়ে সেই আধিকারিকদের তলব করা হয়েছে। ওই উত্তরের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।